পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ २२५' ] কামিনীসঙ্গ লইবার স্পৃহায় আমরা ঘুরিয়৷ বেড়াই। অতএব বর্তমানকালের সংসার কামে পরিপূর্ণ। সংসারাশ্রমেই আমাদের জীবনাতিবাহিত হইয়া যাইতেছে। সুতরাং অবশিষ্ট আশ্রম দুইটী একেবারে বিলুপ্ত হইয়া গিয়াছে। ধৰ্ম্মের দিকে লক্ষ্য রাখিয়া কিছুদিন সংসারযাত্রা নিৰ্ব্বাহ পূৰ্ব্বক তাহ। তদবস্থায় পরিত্যাগ করিয়া ঈশ্বরসাধনে নিযুক্ত হওয়া বৰ্ত্তমানকালের নিয়মাতীত ব্যাপার হইয়া দাড়াইয়াছে। পূৰ্ব্বকালের সংসারী এবং বৰ্ত্তমান কালের সংসারী একজাতীয় নহেন। পূৰ্ব্বে বলিয়াছি যে, প্রাচীন হিন্দুদিগের ধৰ্ম্মই জীবনের অদ্বিতীয় লক্ষ্য ছিল। এই ভাব ব্রহ্মচর্য্যাবস্থায় তাহাদের হৃদয়ে,—কেবল হৃদয়ে কেন,—শোণিতে, অস্থি মজ্জায় যাইয়া আশ্রয় লইত ; সংসারক্ষেত্রে তাহারা সেই ভাব পুষ্টি করিয়া লইতেন ! একদিকে প্রেম শিক্ষা এবং অপরদিকে সংসারের অনিশ্চয়তা, এই দ্বিবিধ ভাব লাভপূৰ্ব্বক আত্মোন্নতি করিয়া লইতেন। বর্তমান সংসারে কামিনীকাঞ্চন ভাবে আমরা শিক্ষিত। ধৰ্ম্মের কোন সম্বন্ধ নাই । ধৰ্ম্ম পলায়ন করিয়াছেন, কামিনীকাঞ্চনের দোর্দণ্ড প্রতাপে ধৰ্ম্ম প্রাণভয়ে অরণ্যে আশ্রয় লইয়াছেন । সংসারে আর তাহার স্থান নাই । তাই আমরা অধৰ্ম্মের একচ্ছত্রী রাজ হইয়া সংসার-রাজ্যে বাস করিতেছি । তাই ধৰ্ম্মের নাম শুনিলে অঙ্গ জলিয় উঠে, তাই ধৰ্ম্মপ্রসঙ্গকে বাতুলত বলি, তাই ধৰ্ম্মকৰ্ম্মকে সংসারীর অকৰ্ত্তব্য বলিয়া থাকে, তাই আমাদের সস্তানদিগকে ধৰ্ম্মের আশ্রয় লইতে দেখিলে তাহদের তাড়না করি, তাই ধৰ্ম্ম বলিয়। কোন কার্য্যকে কৰ্ম্মের শ্রেণীতে স্থান দিতে চাহি না । আমরা সিদ্ধ হইয়াছি কামিনীতে, সিদ্ধ হইয়াছি কাঞ্চনে, সিদ্ধ হইয়াছি কামিনী-কাঞ্চনযুক্ত স্বার্থ চরিতার্থ করিতে, ধৰ্ম্ম স্থান পাইবেন