পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৩৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ७१७ ] হওয়া যারপরনাই অসম্ভব কথা । সশরীরে সচ্চিদানন্দে বিলীন হওয়া মুখের কথা নহে। সত্যযুগে এই সাধনের ফল প্রত্যাশায় আর্য্যেরা সহস্ৰ সহস্র বৎসর সন্ন্যাসাশ্রমের আশ্রয় লইয়া ধ্যানাবলম্বনপূৰ্ব্বক বিশ্বরচনার নিগৃঢ় রহস্যভেদ করিবার চেষ্টা করিতেন। যখন ধ্যানে সিদ্ধ হইতেন, অর্থাৎ যখন ব্ৰহ্মাণ্ডের স্থল, স্বল্প, কারণাদি উপলব্ধির শক্তি সঞ্চারিত হইত, তখন তাহাকে ধারণা করা যাইত । মনের ধারণশক্তি হইলে সে বিষয় আর বিস্মৃত হওয়া যায় না, সুতরাং তাহা সৰ্ব্বদা মনের অধিকারভুক্ত থাকে। এই ধোয় বস্তু লইয়া মন যখন বিভোর হইয়া পড়ে, তখন অন্যত্রে মনের সম্বন্ধ থাকিতে পারে না, ইহাকে সমাধি কহে । সমাধি যোগীর অবস্থাবিশেষ । সমাধি না হইলে সচ্চিদানন্দের আভাস প্রাপ্তির দ্বিতীয় উপায় নাই। রামকৃষ্ণদেব তোতাপুরীর নিকট অবৈতমতের দীক্ষা গ্রহণপূর্বক সাধন কার্য্যে নিমগ্ন হন এবং তাহার স্থষ্টিছাড়া শক্তিবলে তিন দিনে সমাধি লাভ করেন। তাহার বাস্তবিক যে সমাধি হইয়াছিল, তাহ ন্যাংট তোতাপুরী নিজে স্বীকার করিয়াছিলেন এবং তিনি আশ্চৰ্য্য হইয়া বলিয়াছিলেন যে, সমাধি লাভ করিতে আমার ৪০ বৎসর অতিবাহিত হইয়া গিয়াছে, উনি তিন দিনে কিরূপে সেই অবস্থা লাভ করিলেন ? তিনি এইরূপ ভাবিয়া চিন্তিয়া রামকৃষ্ণদেবের নিকট এগার মাস অবস্থিতি করিয়াছিলেন । এই নিমিত্ত অদ্বৈতবাদ সম্বন্ধে রামকৃষ্ণদেবের উপদেশ গ্রাহ । যেহেতু, তিনি সাধক হইয়া যাহা প্রত্যক্ষ করিয়াছেন, তাহা বিশ্বাস না করিয়া আনুমানিক সিদ্ধ ব্যক্তির কথা কখন গ্রাহ্য হইতে পারে না । রামকৃষ্ণদেব অদ্বৈত বিজ্ঞানী হইয়া অর্থাৎ অদ্বৈত জ্ঞান অণচলে ৰন্ধনপূর্বক দ্বৈত বা লীলার বৃত্তান্ত অবগত হইবার আয়োজন করেন।