পাতা:রামচন্দ্রের বক্তৃতাবলী (দ্বিতীয় ভাগ).pdf/৪৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ 8૨8 ] বিক্রয় করিয়া তাহার অবস্থাস্তর সংঘটিত হইয়া গেল। যখন সেগুন কাষ্ঠের বন নিঃশেষিত হইবার উপক্রম হইল, সে পুনরায় মনে করিল যে, ব্রাহ্মণ ঠাকুর এগিয়ে যাইতে বলিয়াছেন। কাঠুরিয়া তদনন্তর চন্দন বৃক্ষের বন বাহির করিল এবং তথায় কাৰ্য্য করিয়া সে একজন ধনী ব্যক্তির ন্যায় মৰ্য্যাদাপন্ন হইল। কাঠুরিয়া তাহাতে সন্তুষ্ট না হইয়া মনে ভাবিল যে, এগিয়ে যাইবার কথা আছে । চন্দন বৃক্ষের বন অবধি সীমা করিয়া দেন নাই । সে ক্রমে আরও অগ্রসর হইয়া লৌহ তাম্র দস্তা রৌপ্য স্বর্ণ প্রভৃতি বিবিধ খনি প্রাপ্ত হইয়া বিদেশস্থিত লোকজন আনাইয়া কাৰ্য্য করাইতে লাগিল। সে আপনি ঐশ্বৰ্য্যাম্বিত হইল, তাহার পল্লিস্থ লোকেরাও অবস্থাপন্ন হইল এবং বিদেশস্থিত লোকেরাও প্রতিপালিত হইতে লাগিল। কাঠুরিয়া তথাপি চুপ করিয়া রহিল না। তাহার মনে হইতে লাগিল যে ব্রাহ্মণ ঠাকুর এগিয়ে যাইতে বলিয়াছেন, আমি কি জন্য র্তাহার কথা অবহেলা করিব, আরও এগিয়ে দেখি, যদ্যপি কিছু প্রাপ্ত হওয়া যায়। সে তদনন্তর চুণী, পান্না, হীরক এবং মুক্তাদির আকর-স্থানের অধীশ্বর হইয়। পড়িল। কাঠুরিয়ার সুখের আরও ইয়ত্তা রহিল না। রাজপ্রাসাদবিনিন্দিত অট্টালিকায় বাস করিতে লাগিল, হয়, হস্তশিকট প্রভৃতির আতিশয্য হইয়া পড়িল। দিন দিন নুতন তালুক মুলুক সম্পত্তির অন্তর্গত হইতে লাগিল । স্বর্ণের পর্য্যঙ্কোপরি শয়ন, স্বর্ণের তৈজসাদিতে ভক্ষণ, হীরকাদি খচিত পরিচ্ছদ পরিধান, কাঠুরিয়া যেন মহারাজা বাহাদুরের অবস্থায় নিপতিত হইল। কাঠুরিয়া সুখের পারাবারে ভাসিতে লাগিল। ঐশ্বৰ্য্যের অধীশ্বর হইয়। কাঠুরিয়ার আর্থিক দুঃখ তিরোহিত হইল বটে, কিন্তু তাহার নিত্য নব নব ক্লেশের কারণ জন্মিতে লাগিল । বিষয়ীর সুখ নাই, আজ