শুনিতে পাওয়া যায়, এই অবস্থাতে তিনি আপনার প্রকাশিত “সাম্য” নামক গ্রন্থের প্রচার বন্ধ করিতে ইচ্ছুক হইয়াছিলেন। যাহা হউক, তালুর শেষ প্রচারিত এই নবধৰ্ম্মের প্রধান লক্ষণ ছিল বৃত্তি-নিচয়ের সামঞ্জস্ত এবং“শ্ৰীকৃষ্ণই র্তাহার আদর্শ পুরুষ। এই নবভাব ব্যক্ত করিবার জন্য তিনি কৃষ্ণচরিত ও ধৰ্ম্মতত্ত্ব বিষরে গ্রন্থ রচনা করেন।
এদিকে তিনি গবর্ণমেণ্টের ডেপুটী ম্যাজিষ্ট্রেট দলের মধ্যে সৰ্ব্ব-প্রথম শ্রেণীতে উঠিয়া, রাজ-প্রসাদের চিহ্ন স্বরূপ “রায় বাহাদুর” ও সি, আই, ই, উপাধি প্রাপ্ত হন। বঙ্কিম বাৰু চরিত্রাংশে কেশবচন্দ্র সেন বা মহেন্দ্রলাল সরকার বা দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণের সমকক্ষ লোক ছিলেন না; কিন্তু প্রতিভার জ্যোতিতে দেশ উজ্জল করিয়া গিয়াছেন। ঘরে পরে এইরূপে সন্মানিত হইয়৷ ১৮৯৪ সালের ৮ই এপ্রেল দিবসে ভবধাম পরিত্যাগ করেন।
দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ।
এইকালের মধ্যে উপন্যাস ও নাটক রচনা দ্বারা বঙ্গসমাজে যে পরিবর্তন ঘটিয়াছিল, তাহা কথঞ্চিৎ প্রদর্শন করিয়া আর এক সুমহৎ বিপ্লবের বিষয় উল্লেখ করিতে যাইতেছি, তাহা বঙ্গীয় সাহিত্য জগতে “সোমপ্রকাশের” অভু্যদয়।
কলিকাতার দক্ষিণ পূৰ্ব্ব পাঁচ ক্রোশ ব্যবধানে, চাঙ্গড়িপোতা গ্রামে, দাক্ষিণাত্য বৈদিক ব্রাহ্মণ কুলে দ্বারকানাথের জন্ম হয়। তাহার জন্মকাল, বৈশাখ মাস, ১৮২০ সাল। তাহার পিতার নাম হরচন্দ্র দ্যায়রত্ন। দ্যায় রত্ন মহাশয় কলিকাতা হাতিবাগানের সুপ্রসিদ্ধ কাশীনাথ তর্কালঙ্কারের ছাত্র। তিনি সংস্কৃত বিদ্যাতে পারদর্শী হইয়া কলিকাতাতেই টােল চতুম্পাঠী করিয়া অধ্যাপনা কার্য্যে নিযুক্ত হন। “ এতদ্ভিন্ন তাহার অতিরিক্ত ছাত্রও থাকিত। অতিরিক্ত ছাত্রের মধ্যে ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত ও রামতনু লাহিড়ী মহাশয়ের নাম উল্লেখ যোগ্য। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের অনুরোধেই ন্যায়রত্ন মহাশর প্রভাকর পত্রিকার সম্পাদন বিষয়ে তাহার সহায়তা করিতেন।
দ্বারকানাথ তদানীন্তন প্রথানুসারে গুরুমহাশয়ের পাঠশালে কিছুজি পাঠ করিরাই স্বগ্রামস্থ একজন আত্মীয়ের চতুষ্পাঠীতে সংস্কৃত পড়িতে