পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাণ্ডুক্যাপনিষৎ [ ১৮১৭ খ্ৰীষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে প্ৰকাশিত ] ॥ फूभिक| ॥ ওঁ তৎ সৎ। পূর্বের অথবা সম্প্রতিকের পুণ্যের দ্বারা যে কোনো ব্যক্তির ব্ৰহ্মতত্ত্বকে জানিতে ইচ্ছা হয় তাহার কৰ্ত্তব্য এই যে বেদান্তবাক্যের শ্রবণ ও তাহার অর্থের মনন প্ৰত্যহ করেন এবং তদনুসারে জগতের সৃষ্টি স্থিতি ভঙ্গকে দেখিয়া তাহার কারণ যে পরব্ৰহ্ম তাহাতে দৃঢ়তর বিশ্বাস করেন যে এক নিত্য সর্বজ্ঞ সৰ্ব্বশক্তিমান কারণ বিনা জগতের এরূপ নানাপ্রস্মার আশ্চৰ্য্য রচনার সম্ভব হইতে পারে না। এইরূপে জগতের কারণ এবং ব্ৰহ্মাণ্ডের ও তাবৎ শরীরের চেষ্টার কারণ যে পরমেশ্বর তঁহার চিন্তন পুনঃ পুনঃ করিলে সেই ব্যক্তির অবশ্য নিশ্চয় হইবেক যে এই নামরূপময় জগৎ কেবল সত্যস্বরূপ পরমেশ্বরকে আশ্রয় করিয়া সত্যের ন্যায় প্ৰকাশ পাইতেছে তাহার সত্তা অর্থাৎ তেঁহ আছেন এই মাত্র জানা যায়। কিন্তু তঁহার স্বরূপ কোনোমতে জানা যায় না। যেমন এই শরীরে জীব সর্বাঙ্গ ব্যাপিয়া আছেন ইহাতে সকলের বিশ্বাস আছে কিন্তু জীবের স্বরূপ কি প্রকার হয় ইহা কেহ জানেন না। এই প্রকারে মন বুদ্ধি অহঙ্কার ও চিত্তের অধিষ্ঠাতা এবং সর্বব্যাপি অথচ ইন্দ্ৰিয়ের অগোচর পরব্ৰহ্ম হয়েন ইহাই নিত্য ধারণা করিবেন। পরে মরণান্তে এইরূপ জ্ঞাননিষ্ঠ ব্যক্তির জীব অন্যত্র গমন না হইয়া উপাধি হইতে সর্বপ্রকারে মুক্ত হইয়া তৎক্ষণাৎ ব্ৰহ্মস্বরূপ প্ৰাপ্ত হয়। ছান্দোগ্যশ্রীকৃতিঃ । ন তস্য প্ৰাণ উৎক্রামন্তি অত্র ব্ৰহ্ম সমশ্বতে। ওই জ্ঞানির জীব ইন্দ্ৰিয়সহিত শরীর হইতে নিঃসৃত হয়েন না। ইহলোকেই মৃত্যুপরে ব্রহ্মেতে লীন হয়েন। পরমেশ্বর জগতের সৃষ্টি স্থিতি প্ৰলয়ের কৰ্ত্তারূপেই কেবল বোধগম্য হয়েন • ইহাই বেদান্তে সর্বত্ৰ কহেন। তৈত্তিরীয় শ্রুতি। যতো বা ইমানি ভূতানি জায়ন্তে যেন জাতানি জীবন্তি যৎ প্ৰযন্ত্যভিসংবিশন্তি তদ্বিজিজ্ঞাসস্ব তদ্ভহ্মেতি। যাহা হইতে বিশ্বের সৃষ্টি স্থিতি ভঙ্গ হইতেছে তঁাহাকে জানিতে ইচ্ছা কর তেঁহ ব্ৰহ্ম হয়েন। এবং পরমেশ্বরের স্বরূপ কোনোমতে জানা যায় না। ইহা সকল উপনিষদে দৃঢ় করিয়া কহিয়াছেন। তৈত্তিরীয় শ্রদ্ধৃতিঃ । যতো বাচো নিবৰ্ত্তন্তে অপ্ৰাপ্য মনসা সহ ।