পাতা:রামমোহন গ্রন্থাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাণ্ডুক্যোপনিষৎ ર(tS এযোহন্তৰ্যাম্যেষ যোনিঃ সর্বস্য প্রভাবাপ্যয়ৌ হি ভূতানাং ৷৷ ৬ ৷ এই তৃতীয় অবস্থার অধিষ্ঠাতা যে পরমাত্মা তেঁহ তাবৎ বিশ্বের ঈশ্বর হয়েন ঐ পরমাত্মা সৰ্ব্বত্র ব্যাপিয়া সকল বস্তুকে বিশেষরূপে জানেন ঐ পরমাত্মা সকলের অন্তরে স্থিত হইয়া সকলের নিয়মকৰ্ত্ত হয়েন তেঁত সকলের উৎপত্তির কারণ এবং বিশ্বের উৎপত্তি ও লয় তাহা হইতেই হয়। ৬। এখন সাক্ষিস্বরূপ তুরীয়কে কহিতে প্ৰবৰ্ত্ত হইলেন। জাতি গুণ ক্রিয়া সংজ্ঞা সম্বন্ধ ইত্যাদির দ্বারা বস্তুকে বাক্য কহেন। কিন্তু এ সকল সেই তুরীয় পরমাত্মাতে নাই সুতরাং বিশেষণসকলের নিষেধ দ্বারা সেই সৰ্ববিশেষণশূন্য তুরীয় পরমাত্মাকে সংপ্ৰতি কহিতেছেন। নান্তঃপ্রজ্ঞং ন বহিঃপ্রজ্ঞং নোভয়তঃপ্রজ্ঞং ন প্রজ্ঞানঘনং ন প্ৰজ্ঞং নাপ্ৰজ্ঞমদৃষ্টম ব্যবহাৰ্য্যমগ্রাহামলক্ষণমচিন্ত্যমব্যাপদেশ্যমেকাত্মপ্ৰত্যয়সারং প্ৰপঞ্চোপশমং শান্তং শিবমদ্বৈতং চতুৰ্থং মন্যন্তে স আত্মা স বিজ্ঞেয়ঃ ৷ ৭ ৷ নান্তঃপ্রজ্ঞং অর্থাৎ সেই আত্মা স্বপ্নের অধিষ্ঠাতা। এই যে বিশেষণ তাহার ভিন্ন হয়েন ন বহিঃপ্রজ্ঞং অর্থাৎ জাগরণ অবস্থার অধিষ্ঠাতা এই যে বিশেষণ তাহারো ভিন্ন হয়েন নোভয়তঃপ্রজ্ঞং অর্থাৎ জাগরণ এবং স্বপ্ন এ দুয়ের মধ্য অবস্থার অধিষ্ঠাতা এই যে বিশেষণ ইহা হইতেও পরমাত্মা ভিন্ন হয়েন । না প্ৰজ্ঞানঘনং অর্থাৎ সুষুপ্তি অবস্থার অধিষ্ঠাতা এই যে বিশেষণ ইহা হইতেও পরমাত্মা ভিন্ন হয়েন। ন প্ৰজ্ঞং অর্থাৎ এককালে সকল বিষয়ের জ্ঞাত এই যে বিশেষণ ইহা হইতেও ভিন্ন পরমাত্মা হয়েন অর্থাৎ পরমাত্মা ভিন্ন অন্য বিষয় অপ্ৰসিদ্ধ সুতরাং ঐ বিষয় না থাকিলে তাহার জ্ঞান কিরূপে হইতে পারে। এই পূর্বলিখিত বিশেষণের নিষেধ দ্বারা ইহা বুঝাইতেছিল যে পরমাত্মা অচৈতন্য হয়েন এই নিমিত্ত না প্ৰজ্ঞং অর্থাৎ পরমাত্মা অচৈতন্য নহেন। এই শব্দের প্রয়োগ করিয়া পূর্বসন্দেহ দূর করিলেন। পরমাত্মাকে অন্তঃপ্রজ্ঞঃ বহিঃপ্রজ্ঞঃ ইত্যাদি নানা বিশেষণের দ্বারা বেদে কহিয়াছেন। তবে কিরূপে নিষেধের দ্বারা ঐ সকল বিশেষণকে মিথ্যা করিয়া জানা যায়। এই আশঙ্কার সমাধান ভাষ্যে করিতেছেন যে রজুতে যেমন এক বার সর্পভ্ৰম এক বার দণ্ডভ্ৰম হয় যে কালে সর্পভ্ৰম জন্মে সে কালে দণ্ড ভ্ৰম থাকে না। আর যে কালে দণ্ড ভ্ৰম হয় সে কালে সর্পভ্ৰম থাকে না। অতএব যথার্থে উভয় মিথ্যা হইয়া কেবল রজুমাত্ৰ সত্য থাকে সেইরূপ যখন স্বপ্নের অধিষ্ঠাতা করিয়া চৈতন্যকে কহেন তখন জাগরণের অধিষ্ঠাতারূপে র্তাহার প্রতীতি থাকে না। আর যখন জাগরণের অধিষ্ঠাতা করিয়া চৈতন্যকে কহেন তখন স্বপ্নের অধিষ্ঠাতারূপে তাহার অনুভব হয় না। অতএব স্বপ্ন জাগরণ ইত্যাদি উপাধিঘটিত