পাতা:রিক্তের বেদন - কাজী নজরুল ইসলাম.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রিক্তের বেদন্

নিজের একমাত্র সন্তানকে যুদ্ধসাজে সাজিয়ে জন্মভূমির পায়ে রক্ত ঢাল্‌তে পাঠাতেন।

 এ বিসর্জ্জন না অর্জ্জন?

সালার।—

 জননী আর জন্মভূমির দিকে কখনও আর এত স্নেহ এত ব্যথিত দৃষ্টিতে চেয়ে দেখিনি, যেমন তাঁদিগে ছেড়ে’ আস্‌বার দিনে দেখেছিলুম।······শেষ চাওয়া মাত্রেই বোধ হয় এম্‌নি প্রগাঢ়করুণ!·····

 নাঃ, আমাকে হয়রান্ করে ফেল্‌লে এদের অতি ভক্তির চোটে! আমি যেন মহা-মহিমান্বিত এক সম্মানার্হ ব্যক্তিবিশেষ আর কি! দিন নেই, রাত নেই শুধু লোক আস্‌ছে আর আস্‌ছে। যে-আমাকে তারা এইখানেই হাজার বার দেখেছে তারাও আবার আমায় নতুন করে দেখ্‌ছে। এ এক যেন তাজ্জব ব্যাপার। আমি আমার চির পরিচিত শৈশবসাথী বন্ধুদের মাঝে থেকেও মনে কর্‌ছি যেন ‘আবু হোসেনের’ মত এক রাত্তিরেই আমি ঐ রকম একটা রাজা-বাদ্‌শা গোছ কিছু হয়ে পড়েছি! সব চেয়ে বেশী দুঃখ হচ্ছে আমার অন্তরঙ্গ বন্ধুদের ভক্তি দেখে। বন্ধুরা যদি ভক্তি করে, তাহ’লে বন্ধুদের ঘাড়ে পড়ল একটা প্রকাণ্ড মুদ্গর! তাদিগে যতই বল্‌ছি ভো ভো আহম্মকবৃন্দ, তোমাদের এ চোরের লক্ষণ ওর্ফে অতিভক্তি সম্বরণ