পাতা:রিক্তের বেদন - কাজী নজরুল ইসলাম.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রিক্তের বেদন্

বসেছে যে, তাকে বিয়ে কর্‌তেই হবে! সে কি ভয়ানক জোর জবরদস্তি। আমি যত বল্‌ছি ‘না’, সে তত একরোখো ঝোঁকে বলে, ‘হাঁ, নিশ্চয়ই হাঁ!’ সে বলছে যে, সে আমাকে বড্ডো ভালোবেসে ফেলেছে, আমি বল্‌ছি যে, আমি তাকে একদম্ ভালোবাসিনি। সে বল্‌ছে, তাতে কিছু আসে যায় না,—আমাকে ভালোবেসেছে, আমাকেই তার জীবনের চিরসাথী ব’লে চিনে নিয়েছে—বাস্! এই যথেষ্ট! আমার ওজর আপত্তির মানেই বোঝে না সে! আমি যতই তাকে মিনতি করে’ বারণ করি, সে ততই হাসির ফোয়ারা ছুটিয়ে বলে, ‘বাঃ—রে, আমি যে ভালোবেসেছি, তা তুমি বাসবে না কেন?”—হায় একি জুলুম!

 ওরে মুক্ত? ওরে রিক্ত! তোর ভয় নেই, ভয় নেই। এই যে হৃদয়টাকে শুষ্ক করে’ ফেলেছিস, হাজার বছরের বৃষ্টিপাতেও এতে ঘাস জন্মাবে না, ফুল ফুটবে না! এ বালি-ভরা নীরস শাহারায় ভালোবাসা নেই।

 যে ভালোবাস্‌বে না, তাকে ভালোবাসায় কে? যে বাঁধা দেবে না, তাকে বাঁধে কে?—“আমাকে যে বাঁধবে ধরে, এই হবে যার সাধন, সে কি অম্‌নি হবে?······

কারবালা।—

 এই সেই বিয়োগান্ত নিষ্করণ নাটকের রঙ্গমঞ্চ,—যার নামে জগতের সারা মোস্‌লেম নরনারীর আঁখি-পল্লব বড় বেদনায়

১৯