পাতা:লাজুকলতা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মত বসার ভঙ্গি দেখে দেখে, মুখের উদাস নিব্বিকার ভাব দেখে, পঙ্কজের অস্বস্তি কেটে যায়। অঘোরের দুধ দোওয়া আর ডুমুরের পোয়া পোয় দুধ মেপে দেওয়া দেখতে দেখতে সে হয় তো জগৎ সংসার ভুলে গিয়ে ভাবছে, ছেলেটার জন্য এক ফোটা দুধ কিনতে পারলে ভাল হত। দুধ দোয় অঘোর, দুধ মেপে দেয় তার বৌ ডুমুর। অঘোরকে সে একেবারেই বিশ্বাস করে না। এক টাকা সের সামনে দোয়া দুধ, শ্যামবাবুর সঙ্গে বন্দোবস্ত করে সে মাপার কায়দায় তাকে একপো দেড়পো করে দুধ বেশী দিয়ে দিত। মাসে দশ বার টাকার দুধ বেশী দিয়ে খুশী থাকত চার পাঁচটা টাকা পেয়ে। যা পায় তাই তার লাভ ! কে জানে অন্য বাবুদের সঙ্গেও এরকম বন্দোবস্ত ছিল কি না। টের পাবার পর ডুমুর আজকাল দুধ দোয়ার সময় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে, নিজে দুধ মাপে। যে মদ মানুষ বৌয়ের ঘাডে খায় আর চোরাবাজারী একটা বজাত লোকের ফুট ফরমাস খেটে হাত খরচার পয়সা কামায়, এমনি নেমকহারামই সে বোধহয় হয়। ভদ্রলোকদেরও বলিহারি যাই, ডমুর বলে ঝংকার দিয়ে, সোয়ামীকে দিয়ে ইপ্তিরির ঘরে চুরি করতে পিধিত্তিও হয়। অঘোরের সামনেই সে বলে। অঘোর কখনো মুখ বাকায়, কখনো মুচকে একটু হাসে। তাড়াতাড়ি ঘরের কাজ আর রাধাবাড়া সেরে মুখে দুটি গুজে ছেলে কোলে কোথায় যেন চলে ফায় সুবালা সারাদিনের মত । বুড়ি । দিদিমা একলাই ঘরে পড়ে থাকে। > o Vb