বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/২৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ অনেকদিন পরে ভাল হইয়া আবার যখন হরিশ আদালতে উপস্থিত হইল তখন কত লোকে যে তাহাকে অভিনন্দন করিল তাহার সংখ্যা নাই । ব্রজেন্দ্রবাবু সখেদে কহিলেন, ভাই হরিশ, স্ত্রৈণ বলে তোমাকে অনেক লজ্জা দিয়েচি, মাপ ক'রে । লক্ষ কেন, কোটী-কোটীর মধ্যেও তোমার মত ভাগ্যবান নেই, তুমি ধন্ত । ভক্ত বীরেন বলিল, সতী-সাবিত্রীর কথা না হয় ছেড়ে দাও, কিন্তু খন, লীলাবতী, গাগাঁ আমাদের দেশেই জন্মেছিলেন । ভাই, স্বরাজ ফরাজ যাই-ই বল, কিছুতেই হবে না, মেয়েদের যতদিন ন! আবার তেমনি তৈরী করতে পারব। আমার ত মনে হয় শীঘ্রই পাবনায় একটা আদর্শ নারী-শিক্ষা সমিতি গড়ে তোলা প্রয়োজন ; এবং যে আদশ মহিলা তার পার্মানেণ্ট প্রেসিডেণ্ট হবেন তার নাম ত আমরা সবাই জানি । বৃদ্ধ তারিণী চাটুয্যে বলিলেন, সেইসঙ্গে একটা পণ-প্রথা-নিবারণী সমিতিও হওয়া আবগুক । দেশটা ছারখার হয়ে গেল । ব্রজেন্দ্ৰ কহিলেন, হরিশ, তোমার ত ছেলেবেলায় খাশ লেখার হাত ছিল, তোমার উচিত তোমার এই রিকভারি সম্বন্ধে একটা আর্টিকেল লিখে আনন্দবাজার পত্রিকায় ছাপিয়ে দেওয়া । হরিশ কোন কথারই জবাব দিতে পারিল না, কৃতজ্ঞ ভায় তাহার দুই চক্ষু ছল ছল করিতে লাগিল । চার মৃত জমিদার গোসাইচরণের বিধবা পুত্রবধূর সহিত অন্যান্য পুত্রদের বিষয়-সংক্রাপ্ত মামলা বাধিয়াছিল। হরিশ ছিল বিধবার উকিল। জমিদারের আমলা কে যে কোন পক্ষে জানা কঠিন বলিয়া গোপনে পরামর্শের জন্য বিধবা নিজেই ইতিপূৰ্ব্বে দুইএকবার উকিলের বাড়ি আসিয়াছিল। আজ সকালেও তাহার গাড়ি আসিয়া হরিশের সদর দরজায় থামিল। হরিশ সসম্রমে তাহাকে নিজের বসিবার ঘরে জানিয়া বসাইল। আলোচনা পাছে ও-ঘরে মুহুরির কানে যায়, এই ভয়ে উভয়েই সাবধানে ३२७