শান্তিনিকেতন উপলব্ধি । এযঃ, এই-ষে ইনি, এই-যে অত্যন্ত নিকটের ইনি, ইনিই জীবের পরম গতি, পরম ধন, পরম আশ্রয়, পরম আনন্দ– তিনি এক দিকে যেমন গতি আর-এক দিকে তেমনি আশ্রয়, এক দিকে যেমন সাধনার ধন আর-এক দিকে তেমনি সিদ্ধির আনন্দ । কিন্তু, আমাদের লৌকিক বন্ধুকে আমরা অসীমতার মধ্যে উপলব্ধি করছি বটে তবু সীমার মধ্যেই তার প্রকাশ, নইলে তার সঙ্গে আমার কোনো সম্বন্ধই থাকত না । অতএব, অসীম ব্রহ্মকে আমাদের নিজের উপকরণ দিয়ে নিজের কল্পনা দিয়ে আগে নিজের মতো গড়ে নিতে হবে, তার পরে তার সঙ্গে আমাদের ব্যবহার চলতে পারে, এমন কথা বলা হয়ে থাকে । কিন্তু, আমার বন্ধুকে যেমন আমার নিজের হাতে গড়তে হয়নি এবং যদি গড়তে হত তা হলে কখনোই তার সঙ্গে আমার সত্য বন্ধুত্ব হত না, বন্ধুর বাহিরের প্রকাশটি আমার চেষ্টা আমার কল্পনার নিরপেক্ষ— তেমনি অনন্তস্বরূপের প্রকাশও তো আমার সংগ্রহ করা উপকরণের অপেক্ষা করে নি, তিনি অনন্ত বলেই আপনার স্বাভাবিক শক্তিতেই আপনাকে প্রকাশ করছেন । যখনই তিনি আমাদের মানুষ করে হষ্টি করেছেন তখনই তিনি আপনাকে আমাদের অস্তরে বাহিরে মানুষের ধন করে ধরা দিয়েছেন, তাকে রচনা করবার বরাত তিনি আমাদের উপরে দেননি । প্রভাতের অরুণ-আভা তো আমারই । বনের শুামল শোভা তো আমারই । ফুল যে ফুটেছে সে কার কাছে ফুটেছে ? ধরণীর বীণাৰন্ত্রে যে নানা হরের সংগীত উঠেছে সে সংগীত কার জন্তে ? জায়, এই তো রয়েছে মায়ের কোলের শিশু, বন্ধুর-দক্ষিণ-হস্ত-ধরা বন্ধু, এই তো ঘৰে বাহিরে যাদের ভালোবেলেছি সেই আমার প্রিয়জন ',\b१२
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩৩
অবয়ব