ছোটো ও বড়ো এদের মধ্যে যে অনির্বচনীয় আনন্দ প্রসারিত হচ্ছে এই আনন্দ ৰে আমার আনন্দময়ের নিজের হাতের পাতা আসন । এই আকাশের নীল চাদোয়ার নীচে, এই জননী পৃথিবীর বিচিত্র-আল্পনা-জাক বরণবেদিটির উপরে আমার সমস্ত আপন লোকের মাঝখানে সেই সত্যং জ্ঞানমনস্তং ব্ৰহ্ম’ আনন্দরূপে অমৃতরূপে বিরাজ করছেন। এই-সমস্ত থেকে, এই তার আপনার আত্মদান থেকে অবচ্ছিন্ন করে নিয়ে কোন কল্পনা দিয়ে গড়ে কোন দেয়ালের মধ্যে র্তাকে স্বতন্ত্র করে ধরে রেখে দেব ? সেই কি হবে আমাদের কাছে সত্য, আর যিনি অন্তর বাহির ভরে দিয়ে নিত্য নবীন শোভায় চিরন্থন্দর হয়ে ৰসে রয়েছেন তিনিই হবেন তত্ত্বকথা ? তারই এই আপন আনন্দনিকেতনের প্রাঙ্গণে আমরা তাকে ঘিরে বসে অহোরাত্র খেলা করলুম, তবু এইখানে এই-সমস্তর মাঝখানে আমাদের হৃদয় যদি জাগল না, আমরা তাকে যদি ভালোবাসতে না পারলুম, তবে জগৎজোড়া এই আয়োজনের দরকার কী ছিল ? তবে কেন এই আকাশের নীলিমা, আমারাত্রির অবগুণ্ঠনের উপরে কেন এই-সমস্ত তারার চুমকি বসানো, তবে কেন বসন্তের উত্তরীয় উড়ে এসে ফুলের গন্ধে দক্ষিনে হাওয়াকে উতলা করে তোলে ? তবে তো বলতে হয় স্বষ্টি বৃথা হয়েছে, অনস্ত যেখানে নিজে দেখা দিচ্ছেন সেখানে তার সঙ্গে মিলন হবার কোনো উপায় নেই। বলতে হয় যেখানে তার সদাব্রত যেখানে জামাদের উপধাস ঘোচে না ; মা যে অন্ন স্বস্তুতপ্রস্তুত করে নিয়ে বসে আছেন সপ্তানের তাতে তৃপ্তি নেই, আর ধু জালি নিয়ে খেলার জয় যা সে নিজে রচনা করেছে তাতেই তার পেট ধর্জবে । না, এ কেবল সেই-সকল দুর্বল উদাসীনদের ফী ধারা পৰে চলৰে પાર્ણ ... "
পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৩৪
অবয়ব