পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঙ্কিল আবর্ত্তে
১৫১

 নারী-নিগ্রহের বিশেষ উপদ্রব আরম্ভ হইলে আমি একজন ভদ্রলোককে প্রায়ই বেশ্যাদের ঘরে আসিতে দেখিতাম, তিনি আমাদের নিকট তারকবাবু নামে পরিচিত, পতিতাদের মধ্যে চারি পাঁচজন তাঁহার বিশ্বাসভাজন ছিল, আমাকেও তিনি বিশ্বাস করিতেন। আমরা ইহা বিশেষরূপ লক্ষ্য করিয়াছি, তিনি কোন কুমতলবে বেশ্যালয়ে আসেন না। তিনি নারীরক্ষা সমিতির কর্ম্মী— না পুলিশের গোয়েন্দা, তাহা জানি না; কিন্তু আমাকে তিনি বলিয়াছেন, অজিকাল অনেক দুর্ব্বৃত্ত গৃহস্থ ঘরের মেয়ে বৌকে চুরি করিয়া বেশ্যা গৃহে লুকাইয়া রাখে— কোন স্ত্রীলোক কলঙ্কের ভয়ে বাধ্য হইয়া প্রণয়ীয় সহিত স্বেচ্ছায় পতিতালয়ে আশ্রয় গ্রহণ করে— এই সব সন্ধান লইবার জন্যই তিনি গোপনে বেশ্যাদের নিকট যাতায়াত করিয়া থাকেন, আমরা তাঁহার কার্য্যে যথাসাধ্য সাহায্য করিতাম।

 একদিন তারকবাবু আমাকে বলিলেন, “তোমাদের সম্মুখের সমস্ত বাড়ীটা ভাড়া নিয়ে যে নূতন মেয়েটী রয়েছে, তা’র সম্বন্ধে একটু বিশেষ খোঁজ করে দেখবে; আমার প্রয়োজন আছে।” আমি তার পরদিন হইতে সেই বাড়ীতে যাতায়াত করিতে লাগিলাম। অল্পদিনের মধ্যেই মেয়েটার সহিত আমার ভাব হইল। তার ভিতরের কথা অনেকটা জানিলাম।

 কয়েকদিন পর তারকবাবু আসিলে আমি বলিলাম, “মেয়েটি ব্রাহ্মণ বংশীয়া— নাম সুরুচিবালা, তাহার পিতা একজন অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনীয়ার, এখন কাশীতে আছেন, হুগলী জেলার কোন ব্রাহ্মণ যুবকের সহিত সুরুচির বিবাহ হয়। সুরুচি বলে যে, তাহার, স্বামী আর এক বিবাহ করিয়াছিল। সুরুচির স্বামীগৃহে