পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবাজীব নৌবল,ইংরাজ ও সিদ্দিদের সহিত সংঘর্ষ
১৭৯

সিদ্দিদের সহিত মারাঠাদের অশেষ যুদ্ধ

 এজন্য শিবাজীর জীবনে ব্রত হইল জঞ্জির দ্বীপ অধিকার করিয়া পশ্চিম-কুলে সিদ্দিব প্রভাব একেবারে লোপ করা। এই কাজে তিনি অসংখা সৈন্য এবং জলের মত টাকা খরচ করিতে লাগিলেন।

 কিন্তু মারাঠীদের তোপ ভাল ছিল না তোপ চালানে দক্ষতা একেবারেই ছিল না। আর তাহাদের জাহাজগুলি হাবশী-জাহাজের তুলনায় অবজ্ঞার জিনিষ। এই দুই শক্তির মধ্যে যুদ্ধটা বাঙ্গলার ছেলেভুলান গল্পেব “সুন্দববনের বাঘ ও কুমীবেব যুদ্ধের” মত হইল। শিবাজীর সৈন্য অসংখ্য, স্থলপথে অজেয়, অপর দিকে হাবশীবা জল-যুদ্ধে দুর্গ রক্ষা করিতে তেমনি শ্রেষ্ঠ, কিন্তু তাহাদের স্থল-সৈন্য এক হাজাবের বেশী নয়।

 শিবাজী ১৬৫৯ সাল হইতে কোলাবা জেলাযক্রমে বেশী বেশী সৈন্য পাঠাইয়া হাবশী-রাজ্যের স্থলভূমি যথাসম্ভব দখল করিতে লাগিলেন। অনেক দিন ধরিয়া যুদ্ধ চলিল, কখন এপক্ষ আগাইয়া আসে, কখন ওপক্ষ। অবশেষে পণ্ডা-দুর্গ শিবাজী কাড়িয়া লইলেন, আর দ্বীপটি মাত্র সিদ্দিদেব দখলে থাকিল, তাহারা স্থলপথের দুর্গ ও শহরগুলি হারাইল। কিন্তু “পেট ভরিবাব জন্য” জাহাজে করিয়া আসিয়া রত্নগিরি জেলায় গ্রাম লুঠতে লাগিল। প্রতি বৎসর বর্ষার শেষে শিবাজী কয়েক মাস ধরিয়া স্থল হইতে জঞ্জিরা দ্বীপের উপব গোলা ছুঁডিতেন, কিন্তু তাহাতে কোনই ফল হইত না। তিনি বুঝিলেন যে নিজেব যুদ্ধ-জাহাজ থাকিলে তাহার পক্ষে মান-সম্রম ও রাজ্যরক্ষা করা অসম্ভব। তখন নৌবল-গঠনের দিকে তাহার দৃষ্টি পডিল।

শিবাজীর নোবল

 শিবাজীর যুদ্ধ-জাহাজের এবং জলপথে প্রভাব-বিস্তারের ইতিহাস অতি স্পষ্ট ও ধারাবাহিকরূপে জানা যায়। ১৬৫৯ সালে কল্যাণ অধিকার