পাতা:শিশু-ভারতী - চতুর্থ খণ্ড.djvu/১১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বেদের মন্ত্র র্যাহার রচনা করিয়াছিলেন,তাহাদিগকে ঋষি কহিত । এই ঋষিদের জীবন-ধারা বড়ই সরল ছিল বলিয়া মনে হয়। তখনকার দিনে এখনকার মত বড় বড় শহর নিশ্চয়ই ছিল না; ট,াম গাড়ী মোটর গাড়ী, এরোপ্লেন প্রভৃতিও ছিল না; রেলগাড়ী, জাহাজ, টেলিফোন প্রভৃতির ব্যবহারও লোকে জানিত না । পরিবার কাপড় চোপড়ও সাদাসিধে ছিল। একস্থান হইতে অন্য স্থানে যাতায়াত করিতে পদস্থ ধনী ব্যক্তিরা অনেক সময় রথ ব্যবহার করিতেন। এই রথ ঠিক কি রকম দেখিতে ছিল, বল। কঠিন ; তৰে বৰ্ত্তমানে পশ্চিম ভারতে ব্যবহৃত টাঙ্গা এবং এক প্রভৃতি যে ধরণের, অনেকটা সেই ধরণের ছিল বলিয়া মনে হয়। ঋষির সাধারণতঃ জনপদে অর্থাৎ গ্রামে আসিতেন বলিয়াই মনে হয়। দুই-একটা ছোটখাটো শহরও তখন হুইয়া থাকিবে; তাহাতে অন্ত লোক বাস কল্পিত । এই সকল লোক এবং মন্ত্র-রচয়িতা ঋষিরা সকলেই এক সমাজের অন্তভূতি ছিলেন। ইহাদের জাতিগত নাম আর্যা । আর্য্যেরা ভারতবর্ষের আদিম অধিবাসী ছিলেন না ; মধ্যএশিয়ার কোন এক স্থানে তাহার থাকিতেন ; সেখান হইতে হিন্দুকুশ পৰ্ব্বত পার হইয়। তাছারা ভারতবর্ষে প্রবেশ করেন । ভারতবর্ষ তখন একেবারে জনমানবহীন ছিল না । ভারতের আদিম অধিবাসীদিগকে সাধারণভাবে "অনার্য, বলা হইয়া থাকে ৷:ইহারাও একেবারে অসভ্য ছিল বলিয়া মনে হয় না ; এমন কি, ইহাদের নিৰ্ম্মিত দুই একটা নগরের ভগ্নাবশেষ পর্য্যস্ত আবিষ্কৃত হইয়াছে। কিন্তু তথাপি বহিরাগত অাৰ্য্যদের সঙ্গে ইহাদের তুমুল কলহ হয় ; দীর্ঘকাল ধরিয়া এই বিবাদ চলে, অনেক মারামারি কাটাকাটি হয়; পরিণামে আর্য্যরাই জয়ী হন। দেশে অনেক বন-জঙ্গল ছিল । সেই সকল আবাদ করিয়া আর্য্যের বসতি করেন এবং ক্রমশঃ পুৰ্ব্বদিকে ও দক্ষিণদিকে বসতি বিস্তার করিয়া সমস্ত দেশ অধিকার করিয়া ফেলেন। আর্য্যদের এই বসতিবিস্তার গঙ্গানদীর কুলে কুলে পূৰ্ব্বদিকেই সহজে হইয়াছিল বলিয়া মনে হয়। গঙ্গাকে যে হিন্দুরা এত পবিত্র মনে করেন, ইহাও তাহার একটা কারণ হইয়া থাকিবে । এই ভাবে অার্য্যের ক্রমশ: বর্তমান বিহার প্রদেশ পৰ্য্যন্ত বসতি-স্থাপন করিয়া ফেলেন ; তার পর অৰশুই আরও চারিদিকে বিস্তৃত হইয়া সমগ্ৰ ভারতবর্ষই তাহারা অধিকার করেন। বেদের কোন কোন অংশ হয়ত আৰ্য্যদের ভারতে - - BBSAASAASAASAASAA SDDDDD DCBBB L BBBDDS SSAAAS স্বষ্টির আগে কিছু ছিল কি না, ইত্যাদি প্রশ্নের উন্মেষ বেদের মন্ত্রভাগেও দেখিতে পাওয়া যায়। দুই একটা নমুনা এখানে দেওয়া যাইতে পারে। ঋগ্বেদের দশম মণ্ডলে এই প্রকার দার্শনিক প্রশ্নের আলোচনা আমরা যথেষ্ট পাই। এক জায়গায় ঋযি কহিতেছেন—“আদিতে হিরণ্যগৰ্ভ ছিলেন : তিনি সমস্ত ভূত-গ্রামের ঈশ্বর ছিলেন। পৃথিবী এবং আকাশ তিনি ধারণ করিয়! রাখিয়াছিলেন”— ইত্যাদি। (১ • ॥১ •!১২১)। এখানে আমরা দেখিতে পাই বৈদিক ঋষি জগতের স্রষ্টাকে জানিতে চাহিতেছেন। জগৎ-স্বষ্টির আগে কি অবস্থা ছিল, তাছার দুই একটি চমৎকার বর্ণনাও আমরা এই দশম মণ্ডলে পাই । “তখন, অর্থাৎ যখন এই জগতের উৎপত্তি হয় নাই, সেই সময়ে, সংও ছিল না, অসৎও ছিল না, এই পরিদৃশ্যমান লোকও ছিল না, এই আকাশও ছিল না এবং কোন কিছুই ছিল না”—ইত্যাদি । শাবার “তখন মৃত্যুও ছিল না, অমৃতও ছিল না, রাত্রিও ছিল, না এবং দিবীও ছিল না” –ইত্যাদি। (১•।১১।১৯২২) বেদের মন্ত্রভাগে দার্শনিক চিন্তা এর বেশী অগ্রসর হইতে পারে নাই। দর্শন শাস্ত্র যাহা জানিতে চায়, তাহা জানিবার আকাক্ষা ঋষিদের মনে উদ্ভূত হইয়াছে, ইহা আমরা উপরের দুষ্টান্তগুলিতে দেখিতে নাই। কিন্তু জগৎ-স্থষ্টির আদিতে কিছুই ছিল না, এ কথা বলিলেই জগৎ-সম্বন্ধে দার্শনিকদের সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যায় না। পরবর্তী দর্শনের মাপকাঠিতে দেখিতে গেলে বেদের মন্ত্রভাগে দর্শন খুব বেশী পাওয়া যায় না । বেদের মন্ত্রভাগ ক্রিয়া-বিধির অধীন ছিল । লাল৷ প্রকার যাগাদি ক্রিয়ায় এই সকল মন্ত্রের প্রয়োগ হইত। ক্রমশ: এই ক্রিয়ার উপরই আর্য্যদের ঝোক পড়িয়া গেল বেণী ; নূতন মন্ত্র রচনার চেয়ে প্রাচীন মন্ত্রের যথাযথ প্রয়োগ কি তাবে করিতে হইবে, তাহ। লইয়া ঋষিরা মাতিয়া গেলেন । *তরাং দার্শনিক গবেষণা আর বেশী দূর অগ্রসর হইত্তে পারিল না । এই ভাবে কিছুদিন কাটিল। XՀ> Ց --