পাতা:শিশু-ভারতী - চতুর্থ খণ্ড.djvu/৩০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[E] ---


ভান্নভীsল্ল পাশল ও পণশলিক --

ক্ষত্ৰিয়েরা ও সংসার ত্যাগ করিয়৷ বনবাসী হইতেন। এই নিয়ম অনুসারে ঋষি যাজ্ঞবাস্কোরও যখন বনবাসী হওয়ার শাস্ত্র সন্মত সময় উপস্থিত হইল, তখন তিনি র্তার স্ত্রী মৈত্রেীকে ডাকিয়া করিলেন, আমি এখন বনে যাইব ; কিন্তু যাওয়ার আগে কাত্যায়নীর সঙ্গে তোমার একটা ভাগ-বাটোয়ারা করিয়া দিয়া যাইতে চাই ।” এইখানে একটা কথা বলা প্রয়োজন। ঋষি যাজ্ঞবল্কোর বিত্তের অভাব ছিল না। এক জনক রাজার বাড়ী হইতেই তিনি হাজার হাজার টাকা ংগ্ৰছ করিয়াছিলেন। তা ছাড়া অঙ্ক রাজারাও র্তাকে কিছু না কিছু দিয়া থাকিবেন, ইহা অনুমান করা কঠিন নছে। সুতরাং তিনি একজন ধনী গৃহস্থই ছিলেন । কিন্তু তথাপি শাস্ত্রমত র্তাহাকে বাদ্ধক্যে বনে যাহতেই ইহবে। তিনি চলিয়া গেলে পাছে দুই সপত্নী এই বিস্তু লইয়৷ কলং করে, এই জন্য তিনি উহ। উভয়েব মধ্যে ভাগ করিয়া দিতে চাচিয়াছিলেন। তাহার কোন পুত্র-কন্ত ছিল বলিয়া জানা যায় না। সেই জন্য তাছার সম্পত্তির উওরাধিকারী ছিলেন তার স্ত্রীরা। সম্পত্তি বিভাগের কথা শুনিয়া ব্ৰহ্মবাদিনী মৈথেলী স্বামীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “আমার পক্ষে Jाई সমস্ত পৃথিবী যদি ধনপুর্ণ হয়, তাহা হইলে তাহাতে কি আমি অমৃত হইতে পারিব ?” ধাজ্ঞবল্কা কছিলেন, “না, না ; ধনী লোকে যেরূপ জীবন যাপন করে, তোমারও তাছাই হবে : fৰত্ত দ্বারা অমরত্বের আশা নাই ।” তখন মৈত্রেয়ী কছিলেন, “যাহা দ্বারা আমি মৃত্যুকে জয় করিতে পারিব না, তাহা লইয়া আমি কি করিব ? অমরত্ব লাভের যে বিদ্যা আপনি জানেন, তাহাই আমাকে দান করুন।” এই কথা শুনিয়া যাজ্ঞবল্কা কহিলেন, “মৈত্রেয়ী, এই জন্যই ত তুমি আমার এত প্রিয়! তবে শোন, সেই বিস্কাই আমি তোমাকে কহিতেছি, মন দিয়া শোন । “পতি, পত্নী, পুত্র, বিত্ত প্রভৃতি যে মানুষের প্রিয় হয়, তাছা সেই সেই দ্রব্যের জন্ত নয় ; আত্মার জন্তই মাহুষ পতি, পত্নী ও পুত্রকে ভালবাসে। সুতরাং আত্মাকেই দর্শন করিতে চেষ্টা করা উচিত, আত্মার কথাই প্রবণ করা উচিত, আত্মাকেই চিন্তা করা উচিত এবং ~8)ෂථ আত্মাকেই ধ্যান করা উচিত। আত্মা হইতেই সমস্ত জিনিষের উদ্ভব হইয়াছে। ছন্দুভিতে আঘাত করিলে শব্দ হয় , কিন্তু বাছির হইতে সেই শব্দ ধরা যায় না, দুন্দুভি ধরিলেই শব্দও ধৃত হয়। শস্থ ফকিলে যে শব্দ হয় তাহাও -তেমনি বাহির হইতে বন্ধ করা যায় না, শঙ্খটি ধরিমা ফেলিলেই শব্দ ও থামিয়া যায়। এই খানে দেখা যায়, মূল গ্রহণ করিলে মূল হইতে যাহা মিগত হয়, তাহাও গৃহীত হয় ; শব্দের মূল গ্ৰহণ পরিলে শব্দও গ্রীত হয় । সেই প্রকার সকলের মূল’আত্মাকে জানিলে সব কিছুই জানা श्ग्र । "আদি কাষ্টে আগুন দিলে যেমন ধূম নিগত হয়, তেমনি এই মহান আখ হইতেই সমস্তই নিৰ্গত হইয়াছে। ঋগ্বেদ, যজুৰ্ব্বেদ, সামবেদ, অথৰ্ব্ববেদ” ইতিহাস, পুরাণ– সমস্তই লেষ্ট আ স্থার নি:শ্বাস 지 4 || - “এক দিকে এই সমস্ত জগং যেমন আত্মা ইহঁতে উদ্ভূত হইয়াছে, অপর দিকে আবার সমস্তই আস্থা তেই বিলীন হয়। সমস্ত নদীর যেমন একমাত্র গন্তব্য স্থান সমুদ্র, সমস্ত স্পশের একমাত্র আশ্রয় যেমন ত্বক, তেমনিই আত্মাই সমস্তের একমাত্র আশ্রয় ! একখও সৈন্ধব লবণের যেমন সব্বত্রই লবণাস্বাদ, ভিতরে ও বাহিরে কোন প্রভেদ নাই, তেমনই এই আত্মাও সমস্ত বিশ্বের সর্বত্রই রহিয়াছে, ভিতরে ও বাহিরে কোন প্রভেদ নাই। একই আত্মা আমাতে,তোমাতে ও অষ্ঠেতে প্রকাশ পাইতেছে ; মৃত্যুর পর আর আমি-তুমি প্রভেদ থাকিবে না।” এই কথা শুনিয়া মৈত্রেয়ী কছিলেন, “অপানি যে উপদেশ করিতেছেন, তাই ত আমি বুঝিতে পারিতেছি না, আর একটু স্পষ্ট করিয়া বলুন।” যাজ্ঞবল্কা কহিলেন, "কপাট শক্ত বটে, কিন্তু না বুঝিবার ত কিছু নাই। যত দিন মানুষের দ্বৈতবোধ থাকে, তত দিনই আমি-তুমি ভেদ করে ; এক জন দেখে আর এক জনকে, শোনে আর এক জনের কথা, ইত্যাদি। কিন্তু যখনই মানুষ বুঝিতে পারে যে, এই সমস্তই আত্মময়, তখন আবার কে কাচাকে দেখিবে, কে কাহাকে জানিলে,- তখন যে আর কোন প্রভেদই থাকিবে না । মৈত্রেয়ী ! অমৃতত্ব লাভের এই জ্ঞানই পন্থা !” অত:পর যাজ্ঞবল্ক্য বনবাসে চলিয়া গেলেন। --- •-ום|י