পাতা:শিশু-ভারতী - চতুর্থ খণ্ড.djvu/৩৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-বিজ্ঞানের প্রথালভম আলিঙ্কাল্প - মিডিপকে কত বড় একটি তত্বের সন্ধান দিয়াছিল, তাহার গল্প তোমরা পূৰ্ব্বেই শুনিয়াছি। বিজ্ঞানের জন্মকথার ইতিহাসে এইরূপ বহু সুন্দর স্বন্দর গল্প যেখানে সেখানে জমা আছে। যাহা হউক, ব্রাডলি আকাশের মাঝে যে সমতা দেখিয়া আত্মহারা হইয়া পড়িয়াছিলেন, তাহারই প্রতিচ্ছবি এই বায়ু-চলাচল মাপক যন্ত্রটির ব্যবহারের মধ্যে দেখিতে পাইলেন। তিনি যে নৌকায় বসিয়াছিলেন, তাছা পৃথিবীর রূপ ধরিয়াছিল, বাতাস রূপ ধরিয়াছিল নক্ষত্র হইতে আগত আলোক-রশ্মির এবং নৌকার নিজের চলিবার দিক্ পরিবগুন পৃথিবীর নিজের চলিপার কক্ষে ঘুরপাক খাচয় দাড়াচয়ছিল। ব্রাডলির আবিষ্কাপেল সত্যকারের অর্থ বুঝিতে হইলে একটা বিষয়ের স্পষ্ট জ্ঞান পাকা প্রয়োজন । এই জন্য একটি উদাহরণ দিয়া তোমাদের নিকট ব্যাপারটিকে পরিস্কার করিবার চেষ্টা করিতেছি । কল্পনা কর, তুমি একটি রেলেপ গাড়ীর কামৰায় বসিয়া আছ। তখনও গাড়ী চলিতে আরম্ভ করে নাই। কুষ্টি পড়িতেছে। বাতাস একেবারেই না থাকার জন্য বৃষ্টির ফোটাগুলি সব সোজা নামিয়া আসিতেছে। এ অবস্থায় যেমুহূৰ্ত্তে গাড়ীটি গতিশীল হয়, বৃষ্টির ফোটগুলি তখন আর সোজা নামিতে দেখাযায় না, তেরছ। ইঠয়া নামিতে থাকে । ট্রেনের গতি যেমন যেমন দ্রুততর হয়, কুষ্টির এই তেরছা হইয়া পড়িবার ভাবও সেই রূপেই বাড়িতে থাকে । ঠিক এই ভাবেই এইরূপ কল্পনা করা যাইতে পারে যে, নক্ষত্র হইতে যে আলে। পুথিবীতে আসিয়া লাগে, তাছাও পুথিবীর নিজের গতির জন্ত সোজা ইষ্টয়া আসিতে পায় না, তেরছা কইয়া আসিয়া লাগে। বৃষ্টির ফোটাগুলি মে কোণে (Angle) রচনা করিয়া তেরছ। দেখাইতেছে, তাহা এবং ট্রেনের চলিবার গীত এইদুইটি বিষয় লইয়। বৃষ্টির ফোটাগুলি কিরূপ গতিতে পৃথিবীর গায়ে আসিয়া লাগিতেছে, তাহা গননা করিয়া বলিতে পারা সম্ভব । অতএব ঠিক সেই উপায়েই পুথিবী তাহার নিজের কক্ষে যে গতিতে ঘুরিতেছে তাহা এবং যে কোণে (Angle) নক্ষত্রের আলোটি পৃথিবীর গতির দ্বারাতেরছা হইয়া যাইতেছে, সেই কোণটি লইয়া গনন। করিলে অালো কি গতিতে চলিয়া আলিতেছে, তাeাও গণনা করিয়া বলা যাইতে পারে। ব্রাডলি এইভাবেই আলোকের গতি কত, তাহা গণনা যখন করিলেন,তখন - দেখা গেল যে, রোয়েমার পঞ্চাশ বৎসর পূৰ্ব্বে যে কথা ৰলিয়াছিলেন, এক্ষেত্রেও ঠিক সেই কথাই প্রমাণিত হইয়া গেল। তিনিও আলোকের গতি প্রোয়েমারের মতই প্রতি সেকেণ্ডে ১৯২৫ • • মাইল বলিয়া প্রচার করিলেন। স্বয হইতে পৃথিবীর দুরত্ব রোয়েমার ও ব্রাডলি উভয়েরই যাহা জানা ছিল তাহাতে সামান্ত ভুল বৰ্ত্তমান। এই ভুলটা সংশোধন করিলে আলোকের গতি দাড়ায় প্রতি সেকেণ্ডে ১৮৬• • • মাইল । বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে যে মাপ দিয়া সকল প্রকার গতির পরিমাণ হইয়া থাকে তাছা দিয়া বলিতে গেলে বায়ুশূন্য স্থানে আলোকের গতি হয় প্রতি সেকেণ্ডে ২৯৯৭৯৬ x ১ • • • সেন্টিমিটার । এই সংখ্যাই আঙ্গকাল সব থেকে নিভল বলিয়া স্বীকৃত হইয়া থাকে । মানুষের জ্ঞানের রাজ্যের একটি বিচিত্র রহস্ত আছে । তাহার নিকট যদি কোনও সত্য প্রকাশ পায়, তাহা হইলে সে আর নিশেষ্ট হইয়া থাকিতে পারে না । যাeণ প্রকাশ পাইল তাছাকে সব দিক দিয়া ভাল করিয়া শেষ পর্যাস্ত জানিবার ইচ্ছা তাহাকে পাষ্টমা বসে। তাই আলো ও যে চলিতে হইলে সময়ের অধীন হইয়া পড়ে, এই তত্ত্ব যখন প্রথমে রোয়েমার ও পরে ব্রাড লি প্রচার করিলেন, তখন এদিক দিয়৷ মামুষের চেষ্টাও আবার সজাগ হইয়া উঠিল । গ্যালিলিওর মত অতি কৌশলী বৈজ্ঞানিক পাহাড়ের চড়ায় উঠিয়াও যেরূপ পরীক্ষায় কতকাৰ্য্য হইতে পারেন নাই,পরবত্তীকালে প্রায়, সেই উপায়েই প্যারী নগরের এক প্রাহ কষ্টতে অপরপ্রাস্ত আলোক-রশ্মি প্রেরণ করিয়া কণু (Cornu) পৃথিবীর আলো দিয়াই আলোকের গতি ধরিয়া ফেলিলেন । তাহার পর আরও একজন অস্তুতকৰ্ম্ম ফরাসী বৈজ্ঞানিক ফিজে৷ (Fizeau) নিজের পরীক্ষাগারের মধ্যে বসিয়াই শুধু ১•৷১২ ফুট লম্বা একটি যন্ত্র দ্বার। আলোকের গতি মাপিয়া ফেলিলেন । আজকাল এই গতি মাপি্ত হইলে এক হাত পরিমাণ লম্বা যন্ত্র হইলেই চলে। শুধু কি তাহাই ; মানুষের বুদ্ধি ও কৌশল কত অদ্ভুত, তাহা তোমরা এই ব্যাপার হইতেই অনুমান করিতে পারিলে যে, আজকাল এমন সব উপায় আবিষ্কার হইয়াছে, যাচার সাহায্যে আলোকের গতি মাপিতে গেলে আলোক-রশ্মিরই প্রয়োজন হয় না। প্রায় অবিশ্বাস-যোগ্য কথা নহে কি ? বিজ্ঞানের এই সব তত্ব ও তথ্য জটিল। > 8వారి