সুকুমারী। কাল যে তোমাকে খোকার কাপড় কিনে আনবার জন্য এত করে’ বল্লেম, অপমান বোধ হ’ল বুঝি।
সতীশ। অপমান কিসের, মাসিমা! কাল লাহিড়ি সাহেবেব ওখানে আমার নিমন্ত্রণ ছিল, তাই—
সুকুমারী। লাহিড়ি সাহেবের ওখানে তোমাব এত ঘন ঘন যাতাযাতের দরকার কি, তা ত ভেবে পাইনে। তারা সাহেব মানুষ, তোমার মত অবস্থার লোকের কি তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা সাজে? আমি ত শুনলেম, তোমাকে তারা পোঁছে না, তবু বুঝি ঐ বঙীন টাইয়ের উপর টাইপিং প’রে বিলাতি কার্ত্তিক সেজে তাদের ওখানে আনাগোনা করতেই হবে। তোমার কি একটুও সম্মানবোধ নেই। এ দিকে একটা কাজ করতে বল্লে মনে মনে রাগ করা হয়, পাছে ওঁকে কেউ বাডির সরকার মনে করে’ ভুল করে। কিন্তু সরকারও ত ভালো—সে খেটে উপার্জ্জন করে’ খায়।
সতীশ। মাসিমা, আমিও হয় ত অনেক আগেই তা’ পারতেম, কিন্তু তুমিই ত—
সুকুমারী। তাই বটে। জানি, শেষকালে আমারি দোষ হবে! এখন বুঝ্চি, তোমার বাপ তোমাকে ঠিক চিনতেন। আমি আরো ছেলেমানুষ বলে দয়া করে’ তোমাকে ঘরে স্থান দিলেম, জেল থেকে বাঁচালেম, শেষকালে আমারি যত দোষ হ’ল। এ’কেই বলে কৃতজ্ঞতা! আচ্ছা, আমারই না হয় যত দোষ, তবু যে ক’দিন এখানে আমাদের অন্ন খাচ্চ, দরকারমত দুটো কাজই না হয় করে’ দিলে। এমন কি কেউ করে না? এ’তে কি অত্যন্ত অপমান বোধ হয়!
সতীশ। কিছু না, কিছু না, কি কর্তে হবে বল, আমি এখনি কর্চি।