পাতা:শোধবোধ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম অঙ্ক
শােধ-বােধ
চতুর্থ দৃশ্য

 নলিনী। তা হ’লে ডুমুরের ফুল এবং সাপের পাঁচ পাও দেখ্‌তে পেতাম!

 সতীশ। আবার ঠাট্টা! তুমি বড়ো নিষ্ঠুব। সত্যই বল্চি নেলি, আজ বিদায় নিতে এসেছি।

 নলিনী। দোকানে যেতে হবে?

 সতীশ। মিনতি কর্চি নেলি, ঠাট্টা করে’ আমাকে দগ্ধ করো না। আজ আমি চিরদিনের মতো বিদায় নেবো!

 নলিনী। কেন, হঠাৎ সে জন্য তোমার এত বেশি আগ্রহ কেন?

 সতীশ। সত্য কথা বলি, আমি যে কত দরিদ্র, তা তুমি জান না!

 নলিনী। সে জন্য তোমার ভয় কিসের। আমি তো তোমার কাছে টাকা ধার চাইনি।

 সতীশ। তোমার সঙ্গে আমার বিবাহেব সম্বন্ধ হ’য়েছিল—

 নলিনী। তাই পালাবে? বিবাহ না হ’তেই হৃৎকম্প!

 সতীশ। আমার অবস্থা জান্‌তে পেরে মিষ্টার লাহিড়ি আমাদের সম্বন্ধ ভেঙে দিলেন।

 নলিনী। অমনি সেই অপমানেই কি নিরুদ্দেশ হ’য়ে যেতে হবে। এত বড়ো অভিমানী লোকের কারো সঙ্গে কোনো সম্বন্ধ বাখা শোভা পায় না। সাধে আমি তোমার মুখে ভালবাসার কথা শুন্‌লেই ঠাট্টা ক’রে উড়িয়ে দি।

 সতীশ। নেলি, তবে কি এখনো আমাকে আশা রাখ্‌তে বলো!

 নলিনী। দোহাই সতীশ, অমন নভেলি ছাঁদে কথা বানিয়ে বলো না, আমার হাসি পায়। আমি তোমাকে আশা রাখ্‌তে ব’ল্‌বো কেন? আশা যে রাখে, সে নিজের গরজেই রাখে, লোকের পরামর্শ শুনে রাখে না।

৬২ ]