পাতা:শ্যামল ও কাজল - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্যামল ও কাজল Ο এই দৃশ্যের অদূরে আর এক চিত্র। ঘুটে ফুলগুলি দীঘির পাড়ে ফুটিয়া আছে, যেন সিংহের রক্তবর্ণ থাবা । বাজাসনের স্তম্ভগুলির নীচে এবং অলিন্দ হইতে সেই ঢাক্কা ও অপরাপর বাদ্যের নিনাদে তাড়িত হইয়া শ্বেতাভ ঈষৎ রক্তিম পায়রাগুলি ঝাকে ঝাকে দীঘির পাড়ের বৃক্ষ-পল্লবে আশ্রয় লইয়াছে, মনে হইতেছে, যেন তাহারা পদ্ম-কুঁড়ির একটি হার তৈয়ারী করিয়াছে। অদূরে তমাল-বীথি জমাট আঁধারের মত দাড়াইয়া আছে, যেন তাহারা সুৰ্য্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে চলিয়া যাইবে । মন্দির হইতে অগুরুর ঘন নীল ধোয়া নিঃসৃত হইয়া আকাশ ভারাক্রান্ত করিতেছে এবং মন্দির হইতে বিকীর্ণ দীপালোকে সেই অমাবস্যা - রাত্ৰিও উজ্জল হইয়া উঠিয়াছে। রক্তাশোকগুলি তাহদের বৃক্ষপত্র গুচ্ছের মাঝে মাঝে দেখা যাইতেছে, যেন উষা দেবী আসিবার পূর্বেই ভোরের টুকরা টুকরা রোদ পাঠাইয়া দিয়াছেন। সমস্ত বাজাসন অঞ্চল ব্যাপিয়া কি এক ভীতি রাজত্ব করিতেছে! সংক্রামক ব্যাধিতে চণ্ডাল-পল্লী জনশূন্য হইতেছে, —এইরূপ জনশ্রুতি শোনা যাইতেছে। কিন্তু কেহ কেহ ফিস ফিস করিয়া এমন সকল কথা কহিতেছে, যাহা “চুপ চুপ” প্রভৃতি নিষেধাত্মক বাক্যে শ্রোতারা থামাইয়া দিতেছে। বণিক, কুম্ভকার, কৈবৰ্ত্তদের কুলবধুরা রাত্রে পূজা দিতে আসে এবং তাঁহাদের স্বামীদের বহু নিষেধ-সত্ত্বেও তাহারা রাত্রে বাজাসন মঠেই থাকিয়া যায়। S GS