পাতা:শ্যামল ও কাজল - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মন্দুরা হইতে আনীত বহু অশ্বের মধ্য হইতে তাহার নিজের “রণজয়” নামক ঘোড়াটিকে বাছিয়া লইল । ঘোড়ার বর্ণে বৈচিত্ৰ্য বা বাহ শোভা বিশেষ কিছুই নাই। পা চারিটি স্বাভাবিক অপেক্ষা একটু বেশী লম্বা, দেহ কৰ্ম্মঠ, দীর্ঘ ও বেগশালী, পুচ্ছটি মালীর হাতে ছাটা পুষ্প-তরুর মত একটা গুচ্ছের আকৃতি, চোখ হইতে তীব্ৰ জ্বালা ঠিকারাইয়া পড়িতেছে। সমস্ত দেহ সাদা, কেবল ঘাড়ের পাশে জেব্রার মত ছাই রঙের ডোরা ; উহার বিশেষত্ব কিছুই নাই। কিন্তু শ্যামল তাহার গায়ে হাত দিতেই সে যেন তাহার সোয়ারকে চিনিয়া আহলাদে ডাকিয়া উঠিল, পৃষ্ঠদেশে ঘন ঘন রোমাঞ্চ হইল ; সে স্থির হইয়া দাড়াইল। “এসে’ বসুন,” ঘোড়াটি যেন এই আবেদন জানাইতেছে। ঘোড়ার উপর যে মূল্যবান জিন ছিল, শ্যামলের ইচ্ছাক্রমে তাহ বদলাইয়া সাধারণ একটা আঁটো-সাটো মাটির রঙের জিন তাহাকে পরান হইল । শ্যামল যখন লাফ দিয়া ঘোড়ার উপর উঠিয়া বসিল, তখন তাহার চেহারা বদলাইয়া গিয়াছে। এ কোন যাদুকর ‘দোগামী খেলা দেখাইতে আসিয়াছে! ঘোড়ার খুর। যে মাটি ছুইয়াছে, তাহা ত মনে হইতেছে না! চারিদিকে তিন হাত বেড়ার গণ্ডি ; সেই গণ্ডি অতিক্ৰম করিবার নিয়ম নাই। কিন্তু শ্যামল মুহুমুহুঃ মাটি না। ছুইয়া, বেড়ার বঁাশ স্পর্শ না করিয়া শূন্যপথে সেই গণ্ডি অতিক্রম করিয়া ফিরিয়া সেই গণ্ডির মধ্যে আসিতেছে, যেন অদৃশ্য হস্তে একখানি তরবারি খেলিতেছে, যেন বর্ষার আকাশে YV)