পাতা:শ্যামাপ্রসাদের কয়েকটি রচনা.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎচন্দ্ৰ ও ভারতচন্দ্ৰন্থঃ আজ দাই জন যশস্বী ও প্রতিভাশালী বাঙালীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করিবার জন্য এখানে আমরা মিলিত হইয়াছি। ১২৮৩ সালের ৩১শে ভাদ্র, এই দেবানন্দপর(১) গ্রামে শরৎচন্দ্র জন্মগ্রহণ করেন। প্রায় ছয় বৎসর পাবে, তাঁহার জন্ম-দিবসের এক উৎসব-সভায় তিনুি বলিয়াছিলেন, “এই ৩১শে ভাদ্র বছরে বছরে ফিরে আসবে, কিন্তু একদিন আমি আর আসবো না।...কেবল প্রার্থনা করি, সেদিনও যেন এমনিধারা স্নেহের আয়োজন থেমে না যায়।” এ প্রার্থনা শরৎচন্দ্রের সরলতা ও সহৃদয়তার পরিচায়ক, সন্দেহ নাই। কিন্তু বস্তুতঃ তাঁহার দেশবাসীর প্রতি এ প্রার্থনার কোনও প্রয়োজন ছিল না। বঙ্গসাহিত্যের ভান্ডারে শরৎচন্দ্র যে রত্নরাজি দান করিয়া গিয়াছেন, তাহা অমল্য। বাঙালী বিসমিতিপ্রবণ হইলেও যতকাল বঙ্গভাষা জীবিত থাকিবে, ততকাল তাঁহার উদ্দেশে শ্রদ্ধার আয়োজন থামিবে না-থামিবার নহে। তবে মমান্তিক দঃখের বিষয় এই যে, সেই ৩১শে ভাদ্ৰ—যে দিন তিনি আর আমাদের মধ্যে আসিবেন না বলিয়াছিলেন, সেই শোচনীয় দুদিন যে এত শীঘ্র(২) আসিয়া তাঁহার কথা আজ আমাদিগকে ব্যথার সাহিত সমরণ করাইবে, এ কথা সাবপ্নেও কেহ মনে করেন নাই। বাঙলার দভাগ্য যে, তাঁহার অসমাপ্ত যাত্রাপথের মাঝখানে নিম্ঠর কাল আসিয়া

  • ১৩৪৫ বঙ্গাব্দের ১লা মাঘ দেবানন্দপারে শরৎচন্দ্র ও ভারতচন্দ্রের সমিতিফলক স্থাপনার উপলক্ষে সভাপতির অভিভাষণ।

(১) দেবানন্দ পাের হগলী জেলার একটি গ্রাম। ই, আই, আর-এর ব্যান্ডেল রোল-স্টেশন হইতে তিন মাইল দরে অবস্থিত, শরৎচন্দুের জন্মভূমি। ভারতচন্দ্র এই গ্রামে কিছকাল বাস করিয়াছিলেন। (২) ১৩৪৪ বঙ্গাব্দের ২রা মাঘ। রবিবার কলিকাতা, পাক নিশিং হোমে মাতৃত্যু। S8