পাতা:শ্যামাপ্রসাদের কয়েকটি রচনা.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সর্বোপরি দীর্ঘদিনের পরাধীনতার মনষ্যত্বনাশী গ্রানিভার "বহন করিয়াও প্রাত্যহিকের উন্ধেবী মস্তক উত্তোলন করিবার সামর্থ্য পাই কোথা হইতে ? পঞ্জীভুত অপমানের বলমীকস্তাপে আচ্ছন্ন থাকিয়াও মোহধবংসী সহেযালোকের আভাস দেখিতে পাই কাহার শক্তিতে ?—তাহার একমাত্র উত্তর সাহিত্য। জাতির জীবনের মলে রসধারা জোগাইয়া সাহিত্যই তাহার প্রাণশক্তি অব্যাহত রাখিয়াছে। বাঙলা-সাহিত্যের ইতিহাস সন্দীঘ কালের ইতিহাস। কত রাজবংশের উত্থান-পতন, কত ধমৰ্শমতের উদয়-বিলয়, কত রীতিনীতির আমাদের এই সাহিত্য আজ প্রায় সহস্রাধিক বিষ ধরিয়া জাতীয় সংস্কৃতির বিচিত্র পরিচয় বহন করিয়া আসিতেছে। এই সাহিত্যের ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়া আমরা পিতৃপিতামহের সহিত সচেতন এবং সজীব মানসিক যোগ রক্ষা করিয়া আসিতেছি। নানা কারণে সে যোগ সম্পৰ্ণে অক্ষািন্ন নাই। অর্থহীন প্রথা, যক্তিহীন আচার, আমাজনীয় মঢ়তা শৈবালন্দামের মত দল বধিয়া কখনো কখনো স্রোতপথ রদ্ধ করিয়াছে। আমাদের চৈতন্য জাগরিত হইলে ঐ বাধা অপসারিত করা হয়তো কঠিন হইবে না। কিন্তু একথা স্বীকার না করিয়া উপায় নাই যে, যেটকু যোগ আছে তাহা কেবল সাহিত্যের দ্বারাই সম্ভব হইয়াছে। জাতীয় জীবনে জাতীয় সাহিত্যের প্রভাব সম্পবন্ধে আমরা কিছকাল বড় উদাসীন ছিলাম। এদেশে ইংরেজী শিক্ষার প্রথম যাগে ইংরেজী শিক্ষিত সম্প্রদায়ে সেই ঔদাসীন্যটা এক রকম বিরাদ্ধতার ভােবই ধারণ করিয়া বসিল। বণ্ডিকমচন্দ্র এই সম্প্রদায়কে কশাঘাত করিয়া একদিন রাধী তাঁহারাই বাবা। মহারাজ ! এমন অনেক মহাবদ্ধিসম্পন্ন বাবা জন্মিবেন যে, তাঁহারা মাতৃভাষায় বাক্যালাপে অসমর্থ হইবেন।” বঙ্কিমচন্দ্রের এই বিদ্রুপ অত্যন্ত রাঢ় হইলেও ইহার মধ্যে অত্যুক্তি ছিল না। ইংরেজ রাজত্বের প্রথম যাগে বঙ্গদেশে ইংরেজী ভাষাকেই শিক্ষার মাধ্যম রপে কি ভাবে গ্রহণ করা হইল। তাহার বিস্তারিত ইতিহাস লিপিবদ্ধ করিতে চাহি না, কিন্তু তদানীন্তন শিক্ষিত সমাজের মনোবাত্তি কিরােপ ছিল এই প্রসঙ্গে তাহা স্বভাবতই মনে পড়ে। কলিকাতা VO NR