বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ মাতৃভাষার নানাভিমখী অনশীলন হইতেছে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিম্পনতম শ্রেণী হইতে উচ্চতম শ্রেণী পর্যন্ত মাতৃভাষার মাধ্যমে অধ্যয়ন অধ্যাপন চলিতেছে। ইন্টারমিডিয়েট এবং বি.এ পরীক্ষায় বঙ্গভাষা ও সাহিত্যের পণতির অনশীলনের সব্যবস্থা হইয়াছে। কেবল বাঙলা ভাষা ও সাহিত্য অধ্যয়ন করিয়া ছাত্রছাত্রীগণ সর্বোচ্চ উপাধি গ্রহণ করিতেছেন। মাতৃভাষার প্রতি এই মযাদা দিয়া কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যে আদর্শ স্থাপন করিতে সমর্থ হইয়াছেন, ভারতবর্ষের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে তাহা অলপ বিস্তর অন্যাসত হইতেছে। আশা করি এমন একদিন আসিবে যেদিন ভারতের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিম্নতম পাঠ হইতে উচ্চতম গবেষণা পর্যন্ত মাতৃভাষার বাহিকতায় সম্পন্ন হইতে পারিবে। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় যে সিদ্ধিলাভ করিতে সমর্থ হইয়াছেন তাহার গরত্ন আমরা সব সময় অন্যভব করিতে পারি না। কি প্রচন্ড বিরুদ্ধতার বিরদ্ধে নিরন্তর সংগ্রাম করিয়া আমরা এই যে ফললাভ করিয়াছি, তাহা আমরা বিস্মত হই। অস্ত্ৰাঘাত সহ্য করিয়াও বিমাতার অঙ্গনে মাতৃভাষাকে সম্প্রতিষ্ঠিত করিয়া গিয়াছেন, এখানে সেই পণ্যশ্লোক ঋষিকলাপ পর্বজগণের নাম সন্মরণ করিতেছি। রাজনৈতিক কারণে যদিও দেশের মধ্যে একটা দলাদলির বিষাক্ত আবহাওয়ার উদ্ভব হইয়াছে, তথাপি অতি বড় নিন্দকেও বাঙালী জাতিকে অনৌদায্যের অপবাদ দিতে পারিবে না। আমরা সাহিত্যকে জাতিগঠনের সব শ্রেষ্ঠ উপাদান বলিয়া গণ্য করি। সাহিত্য যেমন জাতির অঙ্গে সঞ্জীবন-রাসের সম্ভার করিয়া জাতিকে সজ্ঞান সচেতন এবং সবল করিয়া তুলে, জাতির সমদ্বোধিত চৈতন্য, সংগঠিত চিন্তাধারা এবং সনিয়ত বিচারবদ্ধি তেমনি মহত্তর সাহিত্য প্রণয়নে সহায়তা করে। বঙ্গদেশের শিক্ষাচার্যগণ এই তত্ত্বটি উপলব্ধি করিয়া তাহা কাব্যতঃ প্রয়োগ করিয়াছিলেন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাব্য বিধির সহিত যাঁহাদের কিছমাত্র পরিচয় আছে তাঁহারা সকলেই সে কথা জানেন। বাঙলাভাষা ও সাহিত্যচর্চার ব্যবস্থা করাই যে কালে আপত্তির কারণ \9 ტ
পাতা:শ্যামাপ্রসাদের কয়েকটি রচনা.pdf/৩৯
অবয়ব