ছিল। আজ কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা হইতে এম.এ. পর্যন্ত সকল শ্রেণীতেই বিভিন্ন প্রাদেশিক ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যয়ন অধ্যাপনার সংযোগ আমরা লাভ করিতেছি। এই ব্যবস্থার প্রবতনের জন্যও পিতৃদেবকে কম প্রতিকলতা সহ্য করিতে হয় নাই, কিন্তু দেশকে প্রদেশের গন্ডির মধ্যে আবদ্ধ রাখার মত মনোবাত্তি তাঁহার ছিল না। তিনি ভাবিয়াছিলেন নিজের ভাষা এবং নিজের সাহিত্যের অনশীলন করিয়া বাঙালী যে কল্যাণ লাভ করিবে, অন্য জাতি সহযোগের অভাবে সে কল্যাণ হইতে বঞ্চিত হইলে, ক্ষতি শােধ সেই বিশেষ জাতিরই নয়, সে ক্ষতি সমগ্ৰ ভারতবর্ষের। তিনি বঝিয়াছিলেন সব অঙ্গের সংস্থতার উপর সমগ্র দেহের সর্বাস্থ্য নিভাির করে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সঙ্গে সঙ্গে সদর দক্ষিণ-ভারতের তামিল, তেলগ প্রভৃতিকেও স্থান দিয়াছিলেন। যে ভাষা আপন প্রদেশে অনাদত, কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাহাকেও সমগ্র জাতির মািখ চাহিয়া অনাদর করেন নাই। বাঙলা দেশ তাহার বাণীপীঠ হইতে যে আদশ প্রচার করিয়াছে, যেদিন সমগ্র ভারতবর্ষ সেই মহােদশে অন্যপ্রাণিত হইবে, গভীর ঔৎসক্যের সহিত সেই শােভদিনের প্রতীক্ষা করিতেছি। সাহিত্যের সহিত ভাষার যোগ অত্যন্ত নিবিড়। আত্মার সহিত দেহের যে সম্পবিন্ধ সাহিত্যের সহিত ভাষার সেই সম্বন্ধ। যাহাকে ভালবাসি তাহার দেহটাকে বাদ দিয়া শােধ আত্মাটির কথা তো আমরা কলপনা করিতে পারি না। বস্তুতঃ দেহটাকে লইয়াই আমাদের যত কারবার। যে আপনার ভাষাকে ভালবাসে আপনার সাহিত্যের প্রতিও তাহার, মমত্ববোধ সহজেই জাগ্রত হয়। আবার উচ্চতর সাহিত্যে রসের উপলব্ধি ঘটিলে তখন ভাষা ও সাহিত্যের প্রাদেশিক গন্ডি হইতে মন সহজেই মাক্তি লাভ করে। তখন অন্যের ভাষা নিজে পড়িতে এবং নিজের ভাষা অন্যকে পড়াইতে ইচ্ছা হয়। যে কোনো দেশে যে কোনো কালে এই অবস্থা সকলেরই কাম্য। কিন্তু যদি কেহ শিক্ষাদানের মত পণ্যকমকে রাজনৈতিক অথবা অন্য কোনো কুটিল উদ্দেশ্যে নিয়োজিত প্রায়ই এই ধরনের অভিযোগ শনিতে পাওয়া যায়। একজন বাঙালী যদি V8
পাতা:শ্যামাপ্রসাদের কয়েকটি রচনা.pdf/৪০
অবয়ব