বাঙলা শিখিয়া তদপেরি হিন্দী ওড়িয়া অথবা তামিল তেলােগ শিখে, তাহা তো আনন্দের কথা। কিন্তু যদি এমন হয় যে, অন্য প্রদেশের কোনো একটা ভাষা হয়তো শিখিল, কিন্তু মাতৃভাষাটাই শেখা হইল না, তবে তাহার মত দভাগ্য। আর কি হইতে পারে? দেশকে প্রদেশে বিভক্ত করিবার স্বাভাবিক উপায় হইল ভাষাবিচার,-ধমভেদে প্রদেশ ভেদের যে সাম্প্রতিক চেন্টা আরম্ভ হইয়াছে, তাহা পথিবীর কোনো সভ্য জাতির অন্যমোদিত নহে। সতরাং এক প্রদেশের অজ্ঞ নিরক্ষর দরিদ্র মানষেকে সামান্য কিছ প্রলোভন দেখাইয়া যদি তাহাকে অন্য ভাষায় দীক্ষিত করা হয় এবং বারংবার শনাইয়া শনাইয়া তাহার মনে যদি এই বিশ্বাস বদ্ধমল করিয়া দেওয়া যায় যে, ঐ অন্য ভাষাই তাহার মাতৃভাষা, তবে এই প্রদেশের আপত্তি করিবার সংগত কারণ থাকিতে পারে। শিক্ষাদানের মত মহৎ কতব্য আর কি আছে? যাঁহারা শিক্ষাদানের ব্রত গ্রহণ করিয়াছেন তাঁহারা জাতির নমস্য। কিন্তু তাঁহারাও যদি এক প্রদেশীয়কে অন্য প্রদেশীয় বলিয়া প্রমাণ করিবার জন্যই শিক্ষাদান করেন, তাঁহাদের উদ্দেশ্যকে সাধ বলিব না। বাঙলা দেশের তরফ হইতে আমরা কি করিতে পারি। তাহা দেখিতে হইবে। অন্যে আসিয়া যদি আমার নিরক্ষর ভ্ৰাতা-ভগিনীকে তাহারই অক্ষর শিখাইতে থাকে, তাহাকে বাধা দিবার কোনো সংগত কারণ নাই। কিন্তু আমার কতব্যটা তাহার পর্বে পালন করিয়া লইতে হইবে। আমার ভাষা তাহাকে আগে শিখাইয়া দিতে হইবে। সে কে, তাহার পর্ব পরিষের পরিচয় কি, আমার সহিত তাহার এবং তাহার সহিত সমগ্র দেশের সম্প্ৰবন্ধ কিরুপ পথিবীর সকল ভাষার এক এক দল প্রতিনিধি আসিয়া গ্রামে গ্রামে ভাষা শিক্ষার পাঠশালা খলিয়া দিলেও কোনো ক্ষতি হইবে না, বরং কিছ উপরি লাভ হইবে। যে কতব্যের উল্লেখ করিলাম, তাহা একজন দাইজনের কাজ নয়। দেশের শিক্ষিত সমাজকে এই কাজের ভার লাইতে হইবে। দেশের মধ্যে বয়স্ক শিক্ষার সাব্যবস্থা করিতে হইবে। যে দেশের লোক অধিকাংশই নিরক্ষর তাহদের শিক্ষিত করিবার পণ্য গ্রহণ করিতে পারে তরণ ছাত্রসম্প্রদায়ের মধ্যে এমন উৎসাহী কমনীর অভাব হইবে না, সে ভরসা আমি ᏔᏬᏩ
পাতা:শ্যামাপ্রসাদের কয়েকটি রচনা.pdf/৪১
অবয়ব