প্রকাশিত হওয়া সম্ভব হয় না। উপযক্ত অন্যবাদকের অভাব তাহার অন্যতম। অন্যবাদ করিতে গেলে উভয় ভাষায় সমান জ্ঞান থাকা আবশ্যক। ভাষান্তর করিতে গেলে অনেক সময় শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিকের পক্ষেও মলের ভাব এবং রস অব্যাহত রাখা কঠিন হয়। এই সমস্ত অন্তরায় থাকা সত্ত্বেও অন্যবাদ গ্রন্থের আবশ্যক আছে। ইংরেজী এবং ভারতবাসীর সম্মখে উন্মািক্ত করিতে হইবে। কিন্তু ভারতীয় সাহিত্যের জন্য আমি একটি অপেক্ষাকৃত অনায়াসসাধ্য উপায় অবলম্পবনের প্রস্তাব করি। আমি বলি ভারতীয় সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ গ্রন্থসমােহ ভাষা আটটি রাখিয়া শােধ বিভিন্ন লিপিতে মাদ্রিত করা হউক। আমার বিশ্বাস এইরােপ পান্তক বিভিন্ন প্রদেশে পঠিত হইয়া আন্তঃ-প্রাদেশিক মিলনের পথ প্রস্তুত করিবে। আমার প্রস্তাবের পক্ষে কয়েকটি ব্যক্তি প্রদর্শন করিতেছি : ১। ভারতবষের বিভিন্ন ভাষার বণাক্রমে কোনো ভেদ নাই বলিলেই চলে, কেবল লিপির আকৃতি সর্বতন্ত্র। অর্থাৎ, “অ আ ই ঈ” ক খ গ ঘ’ রপে যে ভাবে আমাদের বর্ণমালা সজিজত আছে, ভারতের সকল প্রদেশেই সেইরাপ। এমন কি দক্ষিণ-ভারতেও । প্রাচীন ব্রাহ্মী লিপি হইতে সকল লিপিরই উৎপত্তি। সেইজন্য বাণীবিন্যাসে এই অভিন্নতা। (উদ হরফের কথা সর্বতন্ত্র। তাহার সহিত ভারতীয় অন্য কোনো লিপির মিল নাই।) এই অভিন্নতার ফলে এক ভাষাভাষী পাঠক অন্য "ভাষার বই কেবলমাত্র লিপ্যন্তর করিলেই পড়িতে পরিবেন। এই কথা শােধ অক্ষর সম্পবন্ধে নয়, ১ ২ ৩ ৪ প্রভৃতি অঙ্ক সম্পবন্ধেও প্রযোজ্য। ২। ভারতীয় আৰ্যভাষাসমহের-অর্থাৎ তামিল, তেলগ প্রভৃতি দ্রাবিড়ী এবং কোল, মল্ডা প্রভৃতি আর কয়েকটি অনান্য ভাষা ব্যতীত, আর সকল ভাষার উৎপত্তি সেই বৈদিক সংস্কৃত হইতে। সব আযভাষারই ইতিহাস একরােপ। প্রাকৃত এবং অপভ্রংশ অবস্থা অতিক্রম করিয়া সকলেই বর্তমানরপে আসিয়া পৌঁছিয়াছে। সতরাং আধনিক ভাষাসমহের মধ্যে অনেক মিল আছে। শব্দাবলীতে এই মিল অত্যন্ত অধিক। এক ভাষা অন্য ভাষীর কাছে যতটা দিবোধ্য বলিয়া আমরা ধারণা করি, কাব্যত তাহা সত্য নয়। অপরিচিত লিপিই আমাদের ভয়ের 8SR
পাতা:শ্যামাপ্রসাদের কয়েকটি রচনা.pdf/৪৮
অবয়ব