হইয়াছিল। লীলাবতীর অভিনয়ই “ন্যাশনাল থিয়েটার” স্থাপনার সত্ৰপাত করিয়াছিল। সে ইতিহাস যেমন প্রয়োজনীয় তেমনি চিত্তাকর্ষী। সধবার একাদশীর অভিনয় সাফল্যে উৎসাহিত হইয়া দীনবন্ধ গিরিশচন্দ্রের নিকট প্রস্তাব করিয়াছিলেন যে, ইহার পরে যেন তাঁহার নাতন নাটক লীলাবতীর অভিনয় আয়োজন করা হয়। গিরিশচন্দ্র এই প্রস্তাবে দ্বিরক্তি না করিয়া বইখানি রিহাসােল দিতে আরম্ভ করেন। ইতিমধ্যে উদ্যোক্তারা পাড়া হইতে যে সামান্য চাঁদা তুলিয়াছিলেন, তাহা গোবধান নামে একজন দেশী শিলপীর দ্বারা একটিমাত্র দশ্যপট অঙ্কিত করাইতে ব্যয় হইয়া যায়। অভিনয়কে উন্নত করার কলপনা গিরিশচন্দ্রের মনে চিরদিনই ছিল এবং সেইজন্য তিনি একটি স্থায়ী রঙ্গালয় স্থাপন লাগিয়াছিলেন। তাঁহার এই কলপনাকে সফল করিয়া তুলিতে আর একজন উৎসাহী ব্যক্তির যে আন্তরিক সমর্থন ছিল, তিনি শেষ পর্যন্ত তাহা দেখিয়া যাইতে পারেন নাই। তিনি হইতেছেন। গিরিশচন্দ্রের শ্যালক, ব্ৰজনাথ দেব। তিনি এবং গিরিশচন্দ্র টাকা তুলিবার জন্য একটি সন্দর মতলব করিয়াছিলেন। উভয়েই মেসাস এ্যাটকিনসন টিলটন এন্ড কোম্পানীর মহারী ছিলেন। তাঁহারা ঠিক করিলেন যে, ঐ কোম্পানীতে কাজ করিয়া তাহাদিগের যে দস্তুরি পাওনা হইয়াছিল, তাহা একটি রঙ্গমঞ্চ স্থাপনের জন্য যাহাতে পাওয়া যায়, তাহার জন্য ঐ কোম্পানীর দালালদের নিকট তাঁহারা অন্যুরোধ করিবেন। এ-পর্যন্ত ঐ টাকা তাঁহারা কখনো দাবি করেন নাই। ঐ টাকা পাইয়া শ্যামপকুরের একটি গহ-প্রাঙ্গণে তাঁহারা একটি রঙ্গমঞ্চ স্থাপনা করিতে আরম্ভ করিলেন। রঙ্গমঞ্চের পাদপীঠ তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই প্ৰতিস্ঠানের প্রধান কমকতা ব্ৰজনাথ অসস্থি হইয়া পড়িলেন এবং অচিরেই মাতুকে বরণ করিলেন। রঙ্গমঞ্চ তৈরির কাজ বন্ধ হইয়া গেল এবং তক্তাগলি খালিয়া নিকটস্থ বাগবাজারের একটি বাড়িতে স্থানান্তরিত করা হইল। সেখানে কালীপ্রসাদ চক্রবতী লেনে ধমীদাস সরের বাড়ির সামনে একটি জমিতে তক্তাগলি খাটাইয়া রঙ্গপীঠ তৈরি করা হইল। এই সময়ে আকস্মিকভাবে একজনের সাহায্য পাওয়া গেল। ম্যাকলীন নামে একটি দরিদ্র ইংরাজ নাবিক মাঝে মাঝে বাগবাজার অঞ্চলে ভিক্ষায় আসিত। bÝ (፩
পাতা:শ্যামাপ্রসাদের কয়েকটি রচনা.pdf/৯১
অবয়ব