পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৯৬ ঐীকান্ত চিনিনে। একশবার বাইজী বলে যত অপমানই কর না কেন, রাজলক্ষী তোমাকে যে ফেলে যেতে পারবে না—এ কি আর তুমি মনে মনে বোঝে না ? কিন্তু ফেলে যেত পারলেই ভাল হ’তে । তোমাদের একটা শিক্ষা হ’তো । আমি দ্রুতপদে শ্মশানের পথে প্রস্থান করিলাম । বাপ ! চমকিয় উঠিলাম । সম্মুখে চাহিয়া দেখি, ধূসর বালুর বিস্তীর্ণ প্রান্তর ; এবং তাহাকেই বিদীর্ণ করিয়া শীর্ণ নদীর বক্ররেখা আঁকিয়া-বাকিয়া কোন সুদূরে অন্তৰ্হিত হইয় গেছে । সমস্ত প্রান্তর ব্যাপিয়া এক-একটা কাশের ঝোপ । অন্ধকারে হঠাৎ মনে হইল, এগুলো যেন এক-একট। মানুষ—আজিকার এই ভরঙ্কর অমানিশায় প্রেতাত্মার নৃত্য দেখিতে আমন্ত্রিত হইয়া আসিয়াছে, এবং বালুকার আস্তরণের উপর যে যাহার আসন গ্রহণ করিয়া, নীরবে প্রতীক্ষা করিতেছে ! মাথার উপর নিবিড় কালো আকাশ সংখ্যাতীত গ্ৰহতারকাও আগ্রহে চোখ মেলিয়া চাহিয়া আছে । হাওয়া নাই, শব্দ নাই ; নিজের বুকের ভিতরটা ছাড়া, যতদূর চোখ যায় কোথাও এতটুকু প্রাণের সাড়া পৰ্যন্ত অনুভব করিবার জো নাই। যে রাত্রিচর পার্থীট একবার বাপ, বলিয়াই থামিয়াছিল, সেও আর কথা কহিল না। পশ্চিম-মুখে ধীরে ধীরে চলিলাম— এই দিকেই সেই মহাশ্মশান। একদিন শীকারে আসিয়া সেই যে শিমুলগাছগুলা দেখিয়া গিয়াছিলাম, কিছুদুর আসিতেই তাহাদের কালে কালো ডাল-পালা চোখে পড়িল । ইহারাই মহাশ্মশানের স্বারপাল । ইহাদের অতিক্রম করিয়া যাইতে হইবে । এইবার