পাতা:শ্রীকান্ত-প্রথম পর্ব-কিশোর সংস্করণ.djvu/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শ্রীকান্ড ФУ কিন্তু তাই বলিয়। সেই দুঃখের মধ্যে নিজের দুই হাত বাড়াইয়া আপনাকে জড়িত করিতে যাওয়া সে ঢের ঢের কঠিন কাজ ! একে ত এই পৃথিবীর সেরা সনাতন হিন্দুর ঘরে বশিষ্ঠ ইত্যাদির পবিত্র রক্তের বংশধর হইয়া, জন্মগত সংস্কারবশতঃ মৃতদেহ স্পশ করাকেই একটা ভীষণ ব্যাপার বলিয়া ভাবিতে শিখিয়াছি, ইহাতে কতই ন শাস্ত্রীয় বিধি নিষেধের বাধা-লধি, তাহতে এ কোন রোগের মড়া, কাহার ছেলে, কি জাত—কিছুই না জানিয়া ইহাকে স্পর্শ করা যায় কিরূপে ? কুষ্ঠিত হইয়৷ যেই জিজ্ঞস করিলাম, কি জাতের মড়া—তুমি ছোবে ? ইন্দ্র সরিয়৷ আসিয়া একহা ত তাহার ঘাড়ের তলায় এবং অন্যহাত হাটুর নীচে দিয়া, একট। শুষ্ক তৃণখণ্ডের মত স্বচ্ছন্দে তুলিয়া লইয়া কহিল, নইলে বেচারাকে শিয়ালে ছোঁড়-ছিড়ি করে খাবে । আহা ! মুখে এখনে। এর ওষুধের গন্ধ পর্যন্ত রয়েচে রে ! বলিয় নৌকার ষে তক্তাখানির উপর ইতিপূর্বের আমি শুইয়৷ পড়িয়ছিলাম, তাহারই উপর শোয়াইয় নৌকা ঠেলিয়া দিয়৷ নিজেও চড়িয়া বসিল । কহিল, মড়ার কি জাত থাকে রে ? আমি তর্ক করিলাম, কেন থাকবে না ? ইন্দ্র কহিল, আরে এ যে মড়া । মড়ার আবার জাত কি ? এই যেমন আমাদের ডিঙিট1–এর কি জাত আছে ? আমগাছ, জামগাছ যে কাঠেরই তৈরী হোকু—এখন ডিঙি ছাড়। একে কেউ বলবে না—আমগাছ, জামগাছ—বুঝলি না ? এও তেমনি । দৃষ্টান্তটি যে নেহাৎ ছেলেমানুষের মত, এখন তাহ জানি। কিন্তু অন্তরের মধ্যে ইহাও ত অস্বীকার করিতে পারি না—কোথায়