পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত চতুর্থ ভাগ.djvu/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

.o শ্ৰীশ্রীরামকৃষ্ণকথামৃত I [1883, 1st January هد এইরূপে ভক্তসঙ্গে কথা কহিতে কহিতে বেলা প্রায় দুপ্রহর হইল । শ্ৰীযুক্ত রামলাল ঠাকুরের জন্য থালা করিয়া মা কালীর প্রসাদ আনিয় দিলেন। ঘরের মধ্যে ঠাকুর দক্ষিণাস্ত হইয়া আসনে বসিলেন ও প্রসাদ পাইলেন । আহার বালকের ন্যায়,—একটু একটু সব মুখে দিলেন। আহারান্তে ঠাকুর ছোট খাটটতে একটু বিশ্রাম করিতেছেন । কিয়ৎক্ষণ পরে মাড়োয়ারী ভক্তেরা আসিয়া উপস্থিত হইলেন । পঞ্চম পরিচ্ছেদ । অভ্যাসযোগ। দুইপথ ---বিচার ও ভক্তি ! বেলা ৩টা । মাড়োয়ারী ভক্তের মেজেতে বসিয়। ঠাকুরকে প্রশ্ন করিতেছেন। মাষ্টার, রাখাল ও অন্যান্য ভক্তের ঘরে আছেন । মাড়োয়ারী ভক্ত । মহারাজ, উপায় কি ? ত্রীরামকৃষ্ণ । দুই রকম আছে। বিচার পথ,—আর অনুরাগ বা ভক্তির পথ । “সৎ, অসৎ বিচার । একমাত্র সৎ বা নিত্য বস্তু ঈশ্বর, আর সমস্ত অসৎ বা অনিত্য । বাজীকরই সত্য, ভেন্ধী মিথ্যা। এইটি বিচার । “বিবেক আর বৈরাগ্য। এই সৎ অসং বিচারের নাম বিবেক। বৈরাগ্য অর্থাৎ সংসারের দ্রব্যের উপর বিরক্তি । এটা একবারে হয় ন— রোজ অভ্যাস করতে হয়। কামিনীকাঞ্চন আগে মনে ত্যাগ করতে হয় ;—তার পর তার ইচ্ছায় মনের ত্যাগও করতে হয়, বাহিরের ত্যাগও করতে হয়। কলকাতার লোকদের বলবার যে নাই ‘ঈশ্বরের জন্য সব ত্যাগ কর’— বলতে হয় ‘মনে ত্যাগ কর।” “অভ্যাস যোগের দ্বারা কামিনী কাঞ্চনে আসক্তি ত্যাগ করা যায় । গীতায় এ কথা আছে। অভ্যাস দ্বারা মনে অসাধারণ শক্তি এসে পড়ে। তখন ইন্দ্রিয় সংযম করতে—কাম, ক্রোধ বশ করতে—কষ্ট হয় না। যেমন কচ্ছপ হাত, পা টেনে নিলে আর বাহির করে না ; কুড়ল দিয়ে চার খানা করে কাটলেও আর বাহির করে না।”