পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত দ্বিতীয় ভাগ.djvu/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দক্ষিণেশ্বর-জাপারে—নরেন্মদিকে উপদেশ ১১ লেখাপড়া কিছু শিখিয়াছেন। ভাবিতেছেন বিবেক বৈরাগ্য মানে কি কামিনীকাণ9ন ত্যাগ ? মণি (শ্রীরামকৃষ্ণের প্রতি)–সন্ত্রী যদি বলে, আমায় দেখছো না, আমি আত্মহত্যা করবো। তা হলে কি হবে ? শ্রীরামকৃষ্ণ (গম্ভীরস্বরে)—অমন সত্ৰী ত্যাগ করবে, যে ঈশ্বরের পথে বিঘা করে। আত্মহত্যাই কর্ক, আর যাই করকে। . “যে ঈশ্ববরের পথে বিম্ব দেয়, সে অবিদ্যা স্ত্রী।” গভীর চিন্তামগ্ন হইয়া মণি দেওয়ালে ঠেসান দিয়া একপাশে দাঁড়াইয়া রহিলেন। নরেন্দ্রাদি ভক্তগণও ক্ষণকাল অবাক হইয়া রহিলেন। ঠাকুর তাঁহাদের সহিত একটা কথা কহিতেছেন, হঠাৎ মণির কাছে আসিয়া একান্তে আস্তে আস্তে বলিতেছেন, “কিন্তু যার ঈশ্বরে আন্তরিক ভক্তি আছে, তার সকলেই বশে আসে—রাজা, দন্টে লোক, সত্রী। নিজের আন্তরিক ভক্তি থাকলে সত্ৰীও ক্রমে ঈশ্বরের পথে যেতে পারে। নিজে ভাল হ’লে ঈশ্বরের ইচ্ছাতে সেও ভাল হতে পারে।” মণির চিন্তানিতে জল পড়িল। তিনি এতক্ষণ ভাবিতেছিলেন--আত্মহত্যা করে কর্ক, আমি কি করব ? মণি (শ্রীরামকৃষ্ণের প্রতি)–সংসারে বড় ভয়! শ্রীরামকৃষ্ণ (মণি ও নরেন্দ্রাদির প্রতি)—তাই, চৈতন্যদেব বলেছিলেন, ‘শন শন নিত্যানন্দ ভাই সংসারী জীবের কভু গতি নাই।’ (মণির প্রতি একান্তে)—“ঈশ্বরেতে শািন্ধা ভক্তি যদি না হয়, তা হলে কোন গতি নাই। কেউ যদি ঈশ্ববরলাভ করে সংসারে থাকে, তার কোন ভয় নাই। নিজনে মাঝে মাঝে সাধন করে কেউ যদি শুদ্ধা ভক্তি লাভ করতে পারে, সংসারে থাকলে তার কোন ভয় নাই! চৈতন্যদেবের সংসারী ভক্তও ছিল। তারা সংসারে নামমাত্র থাকত। অনাসক্ত হয়ে থাকতো।” ঠাকুরের ভোগারতি হইয়া গেল। অমনি নহবত বাজিতে লাগিল। এইবার তাঁহারা বিশ্রাম করিবেন। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ আহারে বসিলেন। নরেন্দ্রাদি ভক্তগণ আজও ঠাকুরের কাছে প্রসাদ পাইবেন।