পাতা:শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ কথামৃত দ্বিতীয় ভাগ.djvu/৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

QS শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণকথামত—২য় ভাগ [ ১৮৮৩, ২৮শে নভেম্বর বললে, ভারতে* ঐ কথা আছে। সমাধিপথ লোক সমাধি থেকে নেমে কোথায় দাঁড়াবে? তাই সত্ত্বগুণী ভক্ত নিয়ে থাকে। ভারতের এই নজির পেয়ে তবে বাঁচলুম! (সকলের হাস্য)। “হাজরার দোষ নাই। সাধক অবস্থায় সব মনটা নেতি’ ‘নেতি’ করে তাঁর দিকে দিতে হয়। সিদ্ধ অবস্থায় আলাদা কথা, তাঁকে লাভ করবার পর অনলোম বিলোম! ঘোল ছেড়ে মাখন পেয়ে, তখন বোধ হয়, ঘোলেরই মাখন, মাখনেরই ঘোল। তখন ঠিক বোধ হয়, তিনিই সব হয়েছেন। কোনখানে বেশী প্রকাশ ; কোনখানে কম প্রকাশ। “ভাবসমৃদ্ৰ উথলালে ডাঙ্গায় এক বাঁশ জল। আগে নদী দিয়ে সমুদ্রে আসতে হলে একেবেকে ঘরে আসতে হতো। বন্যে এলে ডাঙ্গায় একবশি জল। তখন সোজা নৌকা চালিয়ে দিলেই হলো। আর ঘরে যেতে হয় না। ধানকাটা হলে, আর আলের উপর দিয়ে ঘরে ঘরে আসতে হয় না! সোজা এক দিক দিয়ে গেলেই হয়। “লাভের পর তাঁকে সবতাতেই দেখা যায়। মানষে তাঁর বেশী প্রকাশ। মানুষের মধ্যে সত্ত্বগুণী ভক্তের ভিতর আরও বেশী প্রকাশ–ধাদের কামিনীকাঞ্চন ভোগ করবার একেবারে ইচ্ছা নাই। (সকলে নিস্তব্ধ)। সমাধিস্থ ব্যক্তি যদি নেমে আসে, তাহলে সে কিসে মন দাঁড় করাবে ? তাই কামিনীকাঞ্চনত্যাগী সত্ত্বগণী শুদ্ধভক্তের সঙ্গ দরকার হয়। না হলে সমাধিস্থ লোক কি নিয়ে থাকে ? [ৱাহ্মসমাজ ও ঈশ্বৰরের মাতৃভাৰ–জগতের भा] “যিনি ব্রহ্ম, তিনিই আদ্যাশক্তি। যখন নিক্ৰিয়, তখন তাঁকে ব্ৰহ্ম বলি। পরষ বলি। যখন সম্মিট, পিথতি, প্রলয় এই সব করেন তাঁকে শক্তি বলি। প্রকৃতি বলি। পরিষে আর প্রকৃতি। যিনিই পর্ষ তিনিই প্রকৃতি। আনন্দময় আর আনন্দময়ী। “যার পরষে জ্ঞান আছে, তার মেয়ে জ্ঞানও আছে। যার বাপ জ্ঞান আছে তার মা জ্ঞানও আছে। (কেশবের হাস্য) ৷ “ষার অন্ধকার জ্ঞান আছে; তার আলো জ্ঞানও আছে। যার রাত জ্ঞান আছে তার দিন জ্ঞানও আছে। যার সখ জ্ঞান আছে, তার দুঃখ জ্ঞানও আছে। তুমি ওটা বঝেছ ?” কেশব (সহাসে)–হাঁ বুঝেছি।

  • ভারত অথাৎ মহাভারত। শ্রীযুক্ত ভোলানাথ তখন কালীবাড়ীর মহেন্রী ; ঠাকুরকে ভত্তি করিতেন ও মাঝে মাঝে গিয়া মহাভারত শনাইতেন। দীননাথ খাজাঞ্জীর পরলোকের পর ভোলানাথ কালীবাড়ীর খাজাঞ্জী হইয়াছিলেন।