পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত (উত্তরাংশ) - অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি.pdf/৩১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ অধ্যায় : তরফের মজুমদারদের কাহিনী শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ৩১৫ হন। পতির পরলোক গমনের পর রামপ্রিয়া প্ৰণষ্ট সম্পত্তির উদ্ধার করেন। গঙ্গাগোবিন্দের পুরুষানুক্রমিক প্রাপ্ত জায়গীর-ভূমি দশসনা বন্দোবস্ত কালে “৬নং তাং গঙ্গাগোবিন্দ" নামে আখ্যাত হইয়াছে ১০ গঙ্গাগোবিন্দের জ্যেষ্ঠপুত্র কৃষ্ণগোবিন্দ পিতৃক্ষমতা প্রাপ্ত হন, কিন্তু কানুনগোদের প্রাপ্য দাবি হইতে বঞ্চিত হইয়া, তৎপরিবর্তে “রসুম" উল্লেখে নিরূপিত কতক মুদ্রা পাইতেন ও "সরঞ্জামীখরচ" বলিয়া সরকার হইতে আরও ৫৮ /০ আনা পাওয়া যাইত। কৃষ্ণগোবিন্দের পুত্র গোপালকৃষ্ণ অল্প কয়েকদিন ইহা প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। এই মহাত্মার মৃত্যুর পর হইতেই এ বংশের অবস্থা অনেকটা মলিন হইয়া পড়িয়াছে। সুঘরের “পাচঘরিয়া” মজুমদারের জ্যেষ্ঠতনয়-বংশে স্বগীয় ঈশানচন্দ্র মজুমদারের উদ্ভব হয়; ঈশানচন্দ্র এ বংশের অলঙ্কারস্বরূপ ছিলেন; তিনি স্বধৰ্ম্মনিরত, সদনুষ্ঠান পরায়ণ ও বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তি ছিলেন। এই মহাত্মা যুব-জনোচিত উৎসাহে আমাদিগকে তরফের এ সব নাই। বিগত ১৩১৫ বঙ্গাব্দে স্বগীয় পুরীধামে তাহার মৃত্যু হয়। ঈশানচন্দ্রের পিতৃ-পিতামহী, নীলকণ্ঠ মজুমদারের পত্নী, পতির মৃত্যুর পর “সহমরণ" গমন করিয়াছিলেন। সুঘরের মজুমদার, তুঙ্গেশ্বর ও জয়পুরের মজুমদারের ন্যায় অতি সম্মানীয়। বহুকাল পর্য্যন্ত তাহারা ও তদনুষঙ্গী ব্রাহ্মণগণ এ দেশ বিবাহ সম্বন্ধ স্থাপন করেন নাই। সামাজিক বিষয় মীমাংসায় তুঙ্গেশ্বরাদির ন্যায় সুঘরেরও অধিকার আছে। আদিত্য বংশ অন্যান্য বংশের কথা তরফের হাসারগাওবাসী আদিত্য বংশ অতি প্রাচীন ও সম্ভান্ত; ইহাদের প্রভাব এক সময়ে তরফে সুপ্রতিষ্ঠিত ছিল, ইহারাই তত্ৰত্য ভূম্যধিকারী ছিলেন। ছোটলিখার আদিত্যগণ এবং ইহারা পরস্পর জ্ঞাতি সম্পর্কিত এক বংশোদ্ভব বলিয়া কথিত, ২য় খণ্ডে তাহা উল্লেখ করা হইয়াছে। এই আদিত্য বংশে রামচন্দ্র খা নামে এক প্রসিদ্ধ ব্যক্তি ছিলেন, ইনি তরফের মুলকউল উলামা সৈয়দ ইস্রাইলের সমসাময়িক ব্যক্তি, ইনি উপবেশনের জন্য এক রৌপ্য সিংহাসন ব্যবহার করিতেন এবং ইনি স্বীয় অধিকার মধ্যে স্থানে স্থানে বহুতর দীঘী এখনও আছে। এই বংশীয়গণ প্রথমতঃ তরফের বালিয়াড়ি গ্রামে বাস করিতেন; বালিয়াড়ি গ্রামের বাড়ী জামাতাকে দান করিয়া হাসারগাও আগমন করেন । শঙ্করদাস আদিত্য, মুক্তারাম আদিত্য প্রভৃতি নামীয় মহালগুলি, আদিত্যদের পূৰ্ব্বসমৃদ্ধির পরিচায়ক। দস্তিদার বংশ দাস পাড়ার দস্তির বংশও অতি সম্মানিত। এই বংশে সুবিখ্যাত সুবিদরায়ের উদ্ভব হইয়াছিল; ইনি শ্রীহট্টের শাসনকৰ্ত্তা গহর খার প্রধান সাহায্যকারী কৰ্ম্মচারী ছিলেন ॥১১ শ্রীহট্টের দস্তিদার বংশ ও এই বংশ একই মূলোৎপন্ন বলিয়া কথিত আছে। দত্ত বংশ দত্ত পাড়ার দত্তবংশের আদি পুরুষ রাঢ়দেশ হইতে আগমন করতঃ প্রথমতঃ তরফের ১০. এই তালুকের ভূ-পরিমাণ ৭৩৬/০ হাল এবং রাজস্ব ৫৭৯/২ পাই। *১১. শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূৰ্ব্বাংশ ২য় ভাগ ২য় খণ্ড ৩য় অধ্যায়ে গহরখার কথা উক্ত হইয়াছে। দস্তিদার ও আদিত্য বংশ কথা তরফেব জনৈক সন্ত্রান্ত ব্যক্তি হইতে প্রাপ্ত ।