পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/২১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৯৩ দ্বিতীয় অধ্যায় : ইটা, বানচাল প্রভৃতি স্থানের কাশ্যপ গোত্রীয় ব্রাহ্মণ 0 শ্ৰীহট্টের ইতিবৃত্ত রামচন্দ্রের কনিষ্ঠ ভ্রাতা শ্যামানন্দের পুত্র গৌরীকান্ত আগমবাগীশ তন্ত্র শাস্ত্রে অভিজ্ঞ ও পরম সাধক ছিলেন, ইনি শ্মশান সাধন করিতেন, কিন্তু তাহাতে সিদ্ধিলাভ করিতে না পারিয়া উন্মাদবৎ শেষজীবন যাপন করেন। রামচন্দ্রের পুত্র রামকৃষ্ণ, তাহার পুত্র শ্রীকৃষ্ণ, তৎপুত্ৰ শ্ৰীযুত কালীচন্দ্র ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয় জীবিত আছেন।" গোবিন্দবাটীর শাখাবংশ কাশ্যপ গোত্ৰীয়ের প্রথমাগমন নিধিপতি-বংশেদ্রোব বাৎস্য গোত্রীয় গোবিন্দরায় চৌধুরীর নামেই সম্ভবতঃ এস্থান “গোবিন্দবাটী” নামে খ্যাত হইয়া থাকিবে। গোবিন্দরামের বৃহৎ বাট এই স্থানেই ছিল। গোবিন্দরাম অপুত্রক ছিলেন এবং তাহার একমাত্র কন্যাকে তিনি ডলার কাশ্যপ গোত্রীয় শুকদেব শিরোমণির করে সমপণ করিয়া জামাতাকে স্বীয় সম্পত্তির অধিকারী করেন। গোবিন্দরামের বিপুল সম্পত্তি প্রাপ্তে শুকদেব ডলা হইতে প্রত্যাগমন পূৰ্ব্বক শ্বশুরালয়ে বাস করেন। ইহার বংশীয়গণই গোবিন্দবাটীর অধিবাসী। তন্মধ্যে রামচন্দ্র ও শ্রীচন্দের বংশ বৰ্ত্তমান আছেন। পতিব্ৰতা অহল্যা হরিশ্চন্দ্রের পত্নী অহল্যাদেবী অতুলনীয় পতিভক্তিসম্পন্না রমণী ছিলেন; তিনি প্রতিদিন পবিত্র ভাবে পুষ্পচয়ন করিতেন, স্নানান্তে সেই চয়িত কুসুমে পতিদেবতাব পাদপদ্ম আচ্চন করিতেন। পুষ্পাঞ্জলি প্রদান না করিয়া জল গ্রহণ করিতেন না। একদা হবিশচন্দ্রে স্থানান্তরে গমনেব আবশ্যক হয়; সতীর নিত্যকৰ্ম্ম তখন চলিবে কিরূপে ? হরিশ্চন্দ্র পত্নিকে বললেন যে পতির প্রতিনিধি রূপে পশুপতির আচর্চনা করিয়া অন্ন গ্রহণ করিও। তদনুসারে পতির অনুপস্থিতে তিনি শিবলিঙ্গ স্থাপন করিয়া পতির উদ্দেশে পুষ্পাঞ্জলি প্রদানান্তে অন্ন গ্রহণ করিতেন। সাগ্রহে শয়ন করেন। সতীর সহমরণে শত শত ব্যক্তি সমবেত হইল, শ্মশানে কুসুম রাশি বর্ষিত হইতে লাগিল। দেখিতে দেখিতে লোকের ভক্তিপূত চিত্তে পবিত্র ভাব উদ্রেক করিয়া, তাহাদের জয়ধবনির মধ্যে সতীদেহ ভস্মীভূত হইয়া গেল। পরবর্তী কথা রামচন্দ্রের জ্যেষ্ঠপুত্র শ্রীকান্ত পবম ধৰ্ম্মিষ্ঠ ব্যক্তি ছিলেন, তিনি স্বগৃহে ধাতুময়ী এক দুর্গা মূৰ্ত্তি স্থাপিত করিয়া পুণ্য অৰ্জ্জন করিয়া গিয়াছেন। একদা তাহার গৃহদাহ হয, তাহাতে সমস্তই দগ্ধীভূত হইয়া যায়। শ্রীকান্ত নশ্বর সম্পত্তির জন্য কিছুমাত্র ক্ষুব্ধ না হইয়া স্বগীয় দুর্গামূৰ্ত্তিব জন্য হাহুতাশ করিতে লাগিলেন। যখন ছাইভস্ম খুঁজিয়া স্বগীয় দুর্গামূৰ্ত্তি পাওয়া গেল না, ঈদৃশ দুর্ঘটনা মূলে দেবীর এই বিবরণ ডলাবাসী শ্রীযুক্ত তৰণী কুমাব ভট্টাচার্য হইতে প্রাপ্ত।