পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৪৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চতুর্থ ভাগ 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত ২২ মহারাজ তথায় কয়েক মিনিট কালমাত্র অবস্থিত করেন। খাঁ সাহেব বিবিধ স্বর্ণালঙ্কারে বিভূষিত একটি হস্তী ও বহুমূল্য একটি অশ্ব উপটৌকন সহ মহারাজকে এক অভিনন্দনপত্র প্রদান করেন। শ্রীহট্ট ও ত্রিপুরা জেলায় কোন হিন্দু বা মোসলমান, ত্রিপুরার মহারাজ হইতে এতাদৃশ সম্মান লাভ করেন নাই। এই উৎসবে খা সাহেবের পঞ্চবিংশতি সহস্র মুদ্রা ব্যয়িত হয়। মহারাজও র্তাহার সম্মানার্থ যাওয়া কালে, কৈলাশহর ডিভিসনের সমস্ত আফিলের বিচার করার ক্ষমতা তাহাকে অৰ্পণ করিয়াছিলেন। হিতকর কার্য্য—১৯০০ খৃষ্টাব্দে এ অঞ্চলে ভালরূপ কৃষি না হওয়ায় তণ্ডুল অতি মহার্ঘ হইয়া উঠিয়াছিল, দরিদ্র প্রজাবর্গের মধ্যে অন্ন কষ্ট উপস্থিত হইয়াছিল, এই দুর্ভিক্ষ প্রশমনের জন্য লংলার হিঙ্গাজিয়ার এক দুর্ভিক্ষ-সভা প্রতিষ্ঠিত হয়, খা সাহেব এই সভার “সেক্রেটারী” ছিলেন, এবং এই সভায় প্রথমেই তিনি একসহস্র মুদ্রা দান করিয়া কার্যকরী সমিতির প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন। তদ্ব্যতীত দুর্ভিক্ষ উপলক্ষে তিনি আরও অনেককে সাহায্য করেন। শ্রীহট্ট শহরের চাদনী ঘাটের উপরে যে ঘড়িঘর আছে, তাহা ইহার অর্থেই বিনিৰ্ম্মিত হইয়াছে। বিদ্রোহ দমন—১৩০৭ বাংলায় ভানুগাছ পরগণা প্রায় ৩/৪ সহস্র মণিপুরী প্রজা বিদ্রোহী হইয়া করিয়াছিলেন। উক্ত দামের নাবালক পুত্র বয়ঃপ্রাপ্ত না হওয়া পৰ্যন্ত, তিনি তাহাকে মাসিক দশ টাকা বৃত্তি নিৰ্দ্ধারণ করিযা এবং পাট্রাদারপুত্রকে ২/০ দুই হাল ভূমি পুত্রপৌত্রাদিক্ৰমে বিনা খাজনায় ভোগ করিতে দিয়া সহৃদয়তার পরাকাষ্টা প্রদর্শন করেন। এই হাঙ্গামায় মোকদ্দমা উপস্থিত হইলে, শ্রীহট্ট জিলার সমস্ত মণিপুরী জাতী চাদ দানে ভানুবিলের মণিপুরী প্রজাদিগকে সাহায্য করিয়াছিল। এদিকে এত লোক, আর অপরদিকে একা এক ব্যক্তি! বিংশতি সহস্ৰ লোকের সমবেত শক্তিকে একা তাহার প্রতিরোধ করিতে হইয়াছিল। আসাম দিয়াছিলেন। তৎকালে খাঁ সাহেব প্রজাদিগকে অশীতি সহস্রমুদ্র “রেহাই” দেন। গবর্ণমেন্ট খাঁ সাহেবকে অনারের মাজিস্ট্রেটের পদে নিযুক্ত করিয়াছিলেন, তিনিও গবর্ণমেন্টর অনুগ্রহ নিদর্শন আগ্রহে গ্রহণ করিয়াছিলেন, কিন্তু নিজ জমিদারী সংরক্ষণে ব্যস্ত থাকায় অবসরাভাবে একমাস মধ্যেই এই পদ তাঁহাকে পরিত্যাগ করিতে হইয়াছিল। বিগত ১৩১২ বাং ১০ই অগ্রহায়ণ তারিখে কলিকাতা মহানগরীতে র্তাহার মৃত্যু হয়। কাচা ঠাকুর কাচা ঠাকুরের প্রকৃত নাম কি ছিল বলা যায় না, ইনি শ্রীহট্ট শহরবাসী এবং সাহুবণিক জাতির ব্রাহ্মণ ছিলেন। ঠাকুর কাচা একজন সিদ্ধ পুরুষ ছিলেন; কথিত আছে একদা একব্যক্তি রাস্ত দিয়া একছড়া কলা লইয়া যাইতেছিল, সে ব্যক্তি তাহার কলা বিক্রয় করিবে কিনা, দূর হইতে তিনি ইহা জিজ্ঞাস করিয়াছিলেন। লোকটির ইচ্ছা ছিল না যে, ঠাকুরের কাছে উহা বিক্রয় করে, তাই সে মিথ্যা করিয় উত্তর দিল—“ঠাকুর মহাশয়, কলা তো কাচা।” কদলী পরিপক্কই ছিল, ঠাকুরও কদলী পরিপক্কই দেখিয়াছিলেন। সেই ব্যক্তির কথা শুনিয়া ঠাকুর বলিলেন, “আচ্ছা, তাহাই হউক।” ক্ষণপরেই