পাতা:শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত - উত্তরাংশ.pdf/৫৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৪১ জীবন বৃত্তান্ত 0 শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত শিষ্য ঠাকুর ব্রজবল্লভ, ইনি তথায় এক দেবালয় প্রতিষ্ঠা করেন, উহাই পানিশালির আখড়া বলিয়া খ্যাত। এই আখড়া হয়বৎ নগরের আখড়ার শাখা বিশেষ। ঠাকুর ব্রজবল্লভ পং ডেওয়াদিনিবাসী জনৈক ব্রাহ্মণকে শিষ্য করেন। ইনি একজন প্রতিভাশালী বিদ্বান ব্যক্তি ছিলেন, বৈষ্ণব হইয়া অতি অল্পকাল মধ্যে ইনি বৈষ্ণব দর্শন, বৈষ্ণব স্মৃতি, ও ভক্তিশাস্ত্রে অভিজ্ঞ হইয়া উঠেন। তাহার অগাধ পাণ্ডিত্য,সদাচার, পরমার্থ নিষ্ঠা ও ভক্তিতে আবাল বৃদ্ধ বিমোহিত হইত; ইহার ফলে শ্রীহট্টের পূৰ্ব্বাঞ্চলের অসংখ্য লোক পানিশালির আখড়ার শিষ্যশ্রেণী ভুক্ত হয়।” এই মহাত্মার নাম শান্তারাম, সচরাচর তিনি ঠাকুর শান্তরাম নামেই কথিত হইয়া থাকেন। শান্তারাম যে শুধু সাধারণ লোকের চিত্ত আকর্ষণ করিয়াছিলেন এমন নহে, দেশের রাজশক্তি, শ্রীহট্টের আমিল বা ফৌজদারগণ, তাহার গুণে মোহিত হইয়া তাহাকে বহু সংখ্যক সনন্দদ্বারা ভিন্ন ভিন্ন স্থানে দেবত্র দান করিয়াছিলেন।" ১১৯৩ সালে তাহার “প্রাপ্তি” (মৃত্যু) ঘটে। নিশালির আখড়ার দেবতার নাম স্বগীয় রাধাবিনোদ বিগ্রহ। এই শ্রীবিগ্রহের দেবত্র ঠাকুর শান্তরামের প্রাপ্ত ভূসম্পত্তি অনেক ছিল, বালাগঞ্জের বাজার প্রভৃতি তাহার অন্তর্ভুক্ত ছিল, এই বাজার লালা আনন্দরামের স্ত্রী স্বীয় গুরু ধৰ্ম্মদাসকে (ধৰ্ম্মদাস শান্তরামের শিষ্যের প্রশিষ্যে ছিলেন) দান করিয়াছিলেন। কিন্তু আখড়ার ধৰ্ম্মনিরত অধিকারিগণ পরমার্থ চিন্তায় নিবিষ্টচিত্ত থাকিতেন, আর্থিক উন্নতি অবনতির প্রতি লক্ষ্যমাত্র ছিল না, তাই তাহা পরে হস্তচু্যত হয়। কোন অধিকারী (পূৰ্ব্বোক্ত ধৰ্ম্মদাস) একদা ইষ্ট চিন্তায উপবেশন করিয়াছিলেন তৎকালে সরকারি প্যাদা রাজস্বের জন্য ডাকাডাকি করায়, বিরক্ত হইয়া ধৰ্ম্মবিঘ্নজনক সেই সম্পত্তিগুলি (ধৰ্ম্মপুর এবং বাজার প্রভৃতি) ত্যাগ করেন। ১৪৪ ধনীবাম নামে এক বিদ্রোহী আত্মা ইহার শিষ্যত্ব স্বীকাব কবিযাছিলেন বলিয়া কথিত আছে। উক্ত বিদ্রোহী অলকেসা থাকিয়া আখড়াব বিবিধ কাৰ্য্য কবিয়া দিত। ধনীবামের উদ্দেশ্যে অদ্যাপি আখড়ায় ভোগের একখানা প্রসাদ অপিত হইয়া থাকে। ১৪৫ ঠাকুব শান্তবামের প্রাপ্ত কয়েকটি সনন্দের মৰ্ম্ম এস্থলে প্রদান কবা অসঙ্গত হইবে না। (১) নবাব হবিকিষুণ দাস মনসুর উল মুলক এক সনন্দে (নং ১১০৫) ৩ জলুসের তাবিখে পং ঢাকা উত্তব মৌজে কবগাও হইতে ৬।১। ভূমি দেবত্র দান করেন। ইহার মন্তব্যে লিখিত আছে যে “শাস্তবাম অধিকারির প্রাপ্তি"হইলে তাহাবশিষ্য জয়গোবিন্দ অধিকাৰী ও দ্যালদাস অধিকাৰী "বিত্ত তছরূপ”কবেন। ইহাও জানা যায় যে, ১২০৭ সালে দযালদাসের প্রাপ্তি ঘটিলে তাহাব শিষ্য ধৰ্ম্মদাস বৈষ্ণব উহা “তছরূপ" করেন। (২) নবাব হাজি হুসেন খা বাহাদুর বযালজেব হইতে এক সনন্দে (নং ১০৬৪) তাহাকে ১ ০৩। ভূমি দেবত্র দেন। ঐ সনন্দেব মন্তব্যে লিখিত আছে যে ১১৯৩ সালে তাহার প্রাপ্তি ঘটিলে তাহার শিষ্য জয়গোবিন্দ ও দ্যালদাস উহা “তছরূপ" করেন। এইরূপ অনেক সনন্দ আছে, দুইখানা মাত্র উদাহরণস্বরূপ উদ্ধত হইল। সাকিন যুবকাবাদ বাসী রত্নবল্লভ দেব ও বামবল্লভ দেব ১১৭০ সালে তাহাব নামে পুবকবাদ হইতে ৪ (০।. ভূমি দেবত্র দান;এই দলিল কালেক্টবিতে ১০৮৮ নং ভুক্ত হইয়া বৰ্ত্তমান আছে। দেশের ভূম্যধিকারিগণেব প্রদত্ত এই রূপ বহু দেবত্রই ছিল; এস্থলে মাত্র একটি কথা উল্লেখিত হইল। ঠাকুর শান্তরাম ব্যতীত তাহাব পূৰ্ব্ববৰ্ত্তী ও পরবর্তী অন্যব্যক্তিদেব নামেও দেবত্রের দানপত্র কালেক্টরীতে দুষ্ট হয;ঠাকুব শাস্তরামেবশিষ্য পূৰ্ব্বোক্ত জয়গোবিন্দ অধিকারী কুশিয়ারকুল হইতে তাহাকে ১০০/হাল ভূমি দেবত্র দান করেন।