২
এক-একদিন জ্যোৎস্নারাত্রে হাওয়া দেয়; বিছানার ’পরে জেগে ব’সে বুক ব্যথিয়ে ওঠে। মনে পড়ে, এই পাশের লোকটিকে তো হারিয়েছি।
এই বিরহ মিটবে কেমন ক’রে, আমার অনন্তের সঙ্গে তার অনন্তের বিরহ?
দিনের শেষে কাজের থেকে ফিরে এসে যার সঙ্গে কথা বলি সে কে। সে তো সংসারের হাজার লোকের মধ্যে একজন, তাকে তো জানা হয়েছে, চেনা হয়েছে, সে তো ফুরিয়ে গেছে।
কিন্তু, ওর মধ্যে কোথায় সেই আমার অফুরান একজন, সেই আমার একটিমাত্র? ওকে আবার নূতন ক’রে খুঁজে পাই কোন্ কূলহারা কামনার ধারে?
ওর সঙ্গে আবার একবার কথা বলি সময়ের কোন্ ফাঁকে, বনমল্লিকার গন্ধে নিবিড় কোন্ কর্মহীন সন্ধ্যার অন্ধকারে?
৩
এমন সময়ে নববর্ষা ছায়া-উত্তরীয় উড়িয়ে পূর্বদিগন্তে এসে উপস্থিত। উজ্জয়িনীর করিব কথা মনে পড়ে গেল। প্রিয়ার কাছে দূত পাঠাই।
আমার গান চলুক উড়ে, পাশে থাকার দূরদূর্গম নির্বাসন পার হয়ে যাক।
কিন্তু, তাহলে তাকে যেতে হবে, কালের উজান পথ বেয়ে বাঁশির ব্যথায়-ভরা আমাদের প্রথম মিলনের দিনে— সেই আমাদের যে-দিনটি বিশ্বের চিরবর্ষা ও চিরবসন্তের সকল গন্ধে, সকল ক্রন্দনে জড়িয়ে রয়ে