বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:সমাজ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিঠিপত্র beఫి. پکتيا হিতের জন্য কঠোর ব্রত পালন করিতে গিয়া এই প্রগর রৌদ্রতাপে আমরা শুষ্ক হইয়া যাই । বড়লোকের জীবনবৃত্তান্ত পড়িয়া কাজ নাই, পাছে এই মশকের দেশে জন্মগ্রহণ করিয়াও আমাদের দুৰ্ব্বল হৃদয়ে বড়লোক হইবাব রাশা জাগ্রত হয় ! তুমি পরামর্শ দিতেছ ঠাণ্ডা হও, ছায়ায় থাক, গৃহের দ্বার রুদ্ধ কর, ডাবের জল খাও, নাসরিন্ধে তৈল দাও, এবং স্ত্রী পুত্র পরিবার ও প্রতিবেশীদিগকে লইয়া নিরুপদ্রবে সুগনিদ্রার আয়োজন কর। কিন্তু এখন পরামর্শ দেওয়া বৃথা—সাবধান করা নিষ্ফল । বাশির ধ্বনি কানে আসিয়াছে, আমরা গৃহের বাহির হইব । যে বন্ধনে আমরা সমস্ত মানবজাতির সহিত যুক্ত, সেই বন্ধনে আজ টান পড়িয়াছে। বৃহৎ মানব আমাদিগকে ডাকিয়াছে, তাহার সেবা করিতে না পারিলে আমাদের জীবন নিষ্ফল । আমাদের পিতৃভক্তি, মাতৃভক্তি, সৌভ্রাত্র্য, বাৎসল্য, দাম্পত্যপ্রেম সমস্ত সে চাহিতেছে, তাহাকে যদি বঞ্চিত করি তবে আমাদের সমস্ত প্রেম ব্যর্থ হয়, আমাদের হৃদয় অপরিতৃপ্ত থাকে। যেমন বালিকা স্ত্রী বয়ঃপ্রাপ্ত হইয়া ক্রমে যতই স্বামী-প্রেমের মৰ্ম্ম অবগত হইতে থাকে, ততই তাহার হৃদয়ের সমুদয় প্রবৃত্তি স্বামীর অভিমুখিনী হইতে থাকে, তখন শরীরের কষ্ট, জীবনের ভয়, বা কোনো উপদেশই তাহাকে স্বামীসেবা হইতে ফিরাইতে পারে না, তেমনি আমরা মানবপ্রেমের মৰ্ম্ম অবগত হইতেছি এখন আমরা মানব-সেবায় জীবন উৎসর্গ করিব, কোনো দাদা মশায়ের কোনো উপদেশ তাহা হইতে আমাদিগকে নিবৃত্ত করিতে পারিবে না। মরণ হয় ত মরিব, কোনো উপায় নাই । কি মুখেই বা বাচিয়া আছি ! আননের কথা বলিতেছ? এই ত আনন্দ ! এই নুতন জ্ঞান, এই নুতন প্রেম, এই নূতন জীবন—এই ত আনন্দ আননের লক্ষণ কি কিছু ব্যক্ত হইতেছে না, জাগরণের ভাব কি কিছু প্রকাশ পাইতেছে