পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

अर्बौ কৌশলে ছটা যে দেখিলে মনে হয় নিবিড় ঘাসে ঢাকা লনটাই যেন সীমানায় পৌছিয়া ঢেউয়ের মত উথলাইয়া উঠিয়াছে। মিসেস লাইয়নকেই বা এ বাগানে কি চমৎকার মানায় । এক কাক রঙীন প্ৰজাপতির মত ফুলে ছাওয়া ছোট একটি চারকোণা প্লটের ধারে মিসেস লাইয়নকে মনে হইতেছে যেন প্ৰকাণ্ড একটা জীবন্ত ফুল। ভাগ্যে এখানে কাজটা সে পাইয়াছিল ! এরকম বাগান মনোহরের স্বর্গেও বোধ হয় নাই। রায়বাহাদুরের বাগান শুধু ফুলের চারায় ঠাসা-যেখানে সেখানে যেভাবে খুর্দী রোপণ করা হইয়াছে, নিয়ম নাই, হিসাব নাই, বাছাকাছি নাই। মানুষ সেখানে কাজ করিতে পারে ? তবু মুগ্ধ ও উত্তেজিত মনোহরের মনটা খুঁত খুত করিতে থাকে। সব আছে কিন্তু কি যেন এখানে নাই। কি যেন থাকা উচিত ছিল, কিসের একটা অভাবের জন্য সে যেন এখানে ফাকিতে পড়িয়া গিয়াছে। খাইয়া পেট না ভরার মত মৃদু একটা অস্বস্তি মনোহরকে পীড়ন করিতে থাকে । অস্বাভাবিক উৎসাহের সঙ্গে সে বাগানে কাজ আরম্ভ করিয়া দেয় । মিসেস লাইয়ান চলিয়া যাওয়ার অনেকক্ষণ পরে বাগানের দক্ষিণ সীমানায় এক ঝাক আজালি চারার কাছে হঠাৎ সে থমকিয়া ছাড়াইয়া পড়ে। কয়েকবার জোরে জোরে শ্বাস টানিয়া ব্যগ্ৰ দৃষ্টিতে চারিদিকে চাহিয়া থাকে। একপাশে কয়েকটি অনাদৃত রজনীগন্ধা ফুটিয়াছে। এখানে রজনীগন্ধা ফুটিতে দেওয়া উচিত হয় নাই, বাগানের শৃঙ্খলা নষ্ট করা হইয়াছে। এটা তার নিজেরই কীৰ্তি, কয়েক দিন আগে নিজেই সে খেয়ালের বশে এ ফুল ফুটবার সুত্রপাত করিয়া রাখিয়াছিল। ՏՏԳ