পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V}\S শুষ্ঠামলাল বলিল, “দেখলি ?” ফেলনা তার পায়ের ধূলা নিয়া বলিল, “আজে দেখলাম। বৈকি। আপনি সব পারেন। তা আপীল করিয়ে যা পেলেন, আগে বললে নয় এমনিই দিয়ে দিতাম ? মিছে ভোগালেন কেন ?” শুষ্ঠামলাল মুচকি মুচকি হাসিয়া বলিল, “তা কি আর তুই দিতি রে হনুমান, তখন বলতি কে কার কড়ি ধারে। আমিই বা চাইতাম কোন মুখে ? ভিখ মাগা তো পেশা নয়।” শুষ্ঠােমলালের শরীরের হাড়ের ফ্রেমটা লম্বা চওড়া, গায়ে মাংস নাই, শুকনো কটা মুখে কামান চোয়াল উদ্ধত প্রতিবাদের মত স্পষ্ট, আর স্পষ্ট নিবিড় কালো মোটা ভুরু। রগের চুলে পাক ধরিয়াছে। কাণে একরাশি চুল। মুখের দিকে চাহিতে হইলে বেঁটে ফেলনাকে মুখ फूलिcठ श्ग्र। ফেলনার হাতে একটি পয়সা নাই, শ্যামলাল তাকে তিনটি টাকা দিল। উপদেশ দিল। এই বলিয়া : সাবধানে থাকিবি কিছু দিন, কিছু জমাবি । ধরা ফের পড়বি হ্রচার-ছ’মাসের মধ্যে, পয়সা না দিলে কিন্তু কেস ছোব না, বলে রাখছি আগে থেকে ’ । মুখের ভারি মোট চামড়া কুঁচকাইয়া সাদা ধবধবে ধাত বাহির করিয়া ফেলনা হাসে। জেল হইলে ফেলনার রাগ হইত, দিন মাস বছর ধরিয়া রাগটা বাড়িত এবং জেলের বাহিরে আসিয়া সকলের আগে বুঝাপড়া করিত শুষ্ঠােমলালের সঙ্গে। খালি গায়ে শুষ্ঠােমলালের পাঁজরের নীচে যে হৃদপিণ্ডটা ধুকধুক করিতেছে দেখা যায়, খুব সম্ভব সেটাই একদিন সুযোগ মত ফুটা করিয়া দিত। এখন আর রাগের কোন কারণ নাই। বিপজ্জনক প্যাচ করিয়া বেশী টাকা সে যে আদায় করিয়াছে সেটা শুষ্ঠামলালের বাহাদুরীর পরিচয় । ফেলনার শ্রদ্ধা ও @\@