পাতা:সরস গল্প - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিভূতিভূষণ ; সরস গল্প কিসের ভয় তার ? তিনি অজর অমর আত্মা । দু’দিনের জন্য লীলাখেলা করিতে পৃথিবীতে আসিয়াছেন। এতদিন বুঝিতে পারেন নাই তাই ছোট হইয়া ছিলেন । হরিদাসবাবু স্বাধীন হইবেন । সর্বপ্রথমে চাকুরী ছাড়িতে হইবে। জীবনকে সম্পূর্ণরূপে ভোগ করিতে হইলে সন্ধান হইতে মুক্ত হইতে হইবে । সেদিন ভাবিলেন, স্ত্রীকে সৰ্প খুলিয়া বলেন। কিন্তু সাহসে কুলাইল না । দশটার সময় অ্যাহারাদি সারিয়া সাজিয়া গুজিয়া প্ৰতিদিনের মত বাহির হইলেন। কিন্তু স্কুলে গেলেন না । পথের মধ্যে আলতাপোলের খালের ওপর যে পুল আছে, তাহার নীচে ঘাসের উপর ছায়ায় গিয়া বসিয়া রহিলেন । সঙ্গে দু’খানা অধ্যাত্মতত্ত্বের পুস্তক । একপ্রকার লুকাইয়াই রহিলেন এইজন্য যে স্কুলের ছেলেরা স্কুলে যাইবার পথে তঁাহাকে দেখিতে পাইবে । স্কুল গিয়া হেডমাস্টারের কাছে বলিয়া দিবে অথবা বাড়ীতে র্তাহার স্ত্রীর নিকট। চুপচাপ থাকিয়া বই পড়িতে পড়িতে বিড়ি টানিতে লাগিলেন। বিড়ি ফুরাইয়া গেল। অসুবিধা হইতে লাগিল। বাজার স্কুলের কাছে। সেখানে বিড়ি কিনিতে গেলে কেউ টের পাইবে । কি করা যায় ? রাস্তা দিয়া একটি লোক বিড়ি টানিতে টানিতে যাইতেছে। কে “লোকটা ? হরিদাসবাবু মুখ বাড়াইয়া দেখিলেন। একটা বিড়ি কি চাহিবেন ? না, লোকটি কি মনে করিবে । হরিদাসবাবু ডাকিলেন-ওহে শোনে-- লোকটি রেলিং হইতে নীচের দিকে চাহিয়া বিস্ময়ের সুরে বলিলকি বাবু ? -নেমে এসে । বাজারে যাচ্চ কি ? দু’পয়সার বিড়ি আমার জন্যে আনবে ? --দাড়ান বাবু।