পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, প্রথম ভাগ).djvu/১৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থকারের বিশেষ লক্ষ্য ছিল দেখা যায় লেখক যদি উপন্যাসে । পাত্ৰগণের সুখদুঃখ এবং হৃদয়ের লীলা বিস্তারিত করিয়া দেখা- ইতে বসিতেন তবে ইতিহাসের গতি অচল হইয়া পড়িত। তিনি একটি প্রবল স্রোতস্বিনীর মধ্যে দুটি একটি নৌকা ভাসাইয়া দিয়া | নদীর স্রোত এবং নৌকা উভয়কেই এক সঙ্গে দেখাইতে চাহি য়াছেন। এই জন্য চিত্রে নৌকার আয়তন অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র হই য়াছে, তাহার প্রত্যেক স্বক্ষানুস্তক্ষ অংশ দৃষ্টিগোচর হইতেছে না। চিত্রকর যদি নৌকার ভিতরের ব্যাপারটাই বেশি করিয়া দেখাইতে চাহিতেন তবে নদীর অধিকাংশই তাহার চিত্ৰপট হইতে বাদ । পড়িত। হইতে পারে কোন কোন অতি কৌতুহলী পাঠক ঐ । 韃 নৌকার অভ্যন্তর ভাগ দেখিবার জন্য অতিমাত্র ব্যগ্র, এবং সেই ৷ জন্য মনক্ষোভে লেখককে তাহার নিন্দ করিবেন। কিন্তু সেরূপ । বৃথা চপলতা পরিহার করিয়া দেখা কৰ্ত্তব্য লেখক গ্রন্থবিশেষে কি করিতে চাহিয়াছেন এবং তাহাতে কতদূর কৃতকাৰ্য্য ड्ड्रेब्रॉब्लन । পূৰ্ব্ব হইতে একটা অমূলক প্রত্যাশা ফাদিয়া বসিয়া তাহ જૂર્વ হইল না বলিয়া লেখকের প্রতি দোষারোপ করা বিবেচনাসঙ্গত নহে। গ্রন্থ পাঠারম্ভে আমি নিজে এই অপরাধ করিবার উপক্রম করিয়াছিলাম বলিয়াই এ কথাটা বলিতে হইল। রাজসিংহ উপন্যাসখানি সম্বন্ধে মোট কথাটা আমার যাহা মনে উদয় হইয়াছে আমি তাহাই এই প্রবন্ধে ব্যক্ত করিলাম। হয় ত খণ্ড খণ্ড বিশ্লেষণ করিয়া ইহার সমস্ত দোষগুণ পুঙ্খানুপুঙ্খরুপে সমালোচনা করা যাইতে পারিত। কিন্তু সে ভাবে লেখা আরম্ভ - করি নাই এবং সে নৈপুণ্যও আমার নাই, অতএব এইখানেই বিরত

অষ্টম পরিচ্ছেদ । । গোবিন সাহেবের পর ডোনাল্ড সাহেব জেলার পাকা কালেক্টর হইয়া আসিলেন। দীনেন্দ্রনাথ তখন কলিকাতার ওয়ার্ড ইনষ্টিটিউটে এবং তাহার মাতা ও পত্নী কুণ্ডলার বাটতে। ম্যানেজার বাবুটা পরলোক গমন করায় পুরাতন নায়েব সিদ্ধেশ্বর রায় সম্প্রতি উনীত হইয়াছিলেন এবং তাহার চেষ্টা ও তদ্বিরে কাছারী সে পদে ডন্নাত হই। হ০০৭ ফের কুণ্ডলায় উঠিয়া আসিয়াছিল। - - অকালী সিংএর প্রত্যাগমনের পরদিন ম্যানেজার মোক্তার ~ হরানন্দ তালুকদারের চিঠি পাইলেন। মোক্তার মহাশয় তাহাতে পূৰ্ব্বদিনের ঘটনা সবিস্তারে বর্ণনা করিয়া বলিতেছেন যে, অদ্যই । কালেকটর সাহেব কুণ্ডল যাত্রার আদেশ দিয়াছিলেন কিন্তু পেসকার মহাশয়ের সহায়তায় তিনি হাকিমের সে রায় ফিরাইয়াছেন। অতঃপর ডোনাল্ড সাহেবের কবে শুভাগমন হইবে, তালুকদারجگلبـ প্রবর সে কথাটা তেমন নিশ্চয় করিয়া বলিতে পারেন নাহ বটে, কিন্তু কৃতোপকারের জন্য পেসকার যে পুরস্কারের যোগ্য তাহার ইঙ্গিত করিয়া যথাসময়ে সকল কথার এত্তালা দিবেন প্রতিশ্রুত হইয়াছেন । সিদ্ধেশ্বর রায় নায়েবির খোলস ছাড়িয়াবধি নিজ নুতন পদগৌরবের উপযোগী কোন একটা কৃতিত্ব দেখাহবার দাও খুজিতেছিলেন, অতএব এই খবরটায় একটু একটু উদ্ধি হইলেও নিতান্ত অগ্রসর হইলেন না। । সংসারে যাহাকে কাজের লোক বলে মৃত ম্যানেজার ঠিক তাই ছিলেন না। তাহার চরিত্রে ধৰ্ম্মভয় এবং চক্ষুলজ্জা নামক ।