পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, প্রথম ভাগ).djvu/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

s>ઝ সাধনা ৷ দুইটা উপসর্গ বিদ্যমান থাকায় দাবী সত্ত্বেও তিনি ছোট তরফের বিষয়টাকে দেনার দায়ে একেবারে জাহান্নমে দিতে চাহিতেন না। কিন্তু সিদ্ধেশ্বর রায় বছর দুয়েক ছোটতরফে মুহুরিগিরি করার পর বড় তরফের নায়েব হইয়াছিলেন, ম্যানেজার হওয়ায় সহজেই ভাবিলেন মনিব সাবালক হইয়া দেওয়ানীটে তাহাকেই দিবেন, অতএব নুতন নিমকের হালালি করিতে যদি পুরাতন নিমকে হারামি ঘটে তাহাতে তিনি পশ্চাৎপদ ছিলেন না । ইহার দুই একটা উত্তেজক কারণও ঘটিয়াছিল। মুহুরী সিদ্ধেশ্বর ম্যানেজার সিদ্ধেশ্বর বাবু হইয়া আসার খবর উঠিলে অকালী সিং একদিন আহলাদ করিয়া তাহাকে দেখিতে যায় বটে, কিন্তু সে সেই আগেকার ধরণে কখন “আপৃ” এবং কখন “তোম” বলিয়া কথাবাৰ্ত্ত কহিয়াছিল। কথায় কথায় ছোট তরফের সঙ্গে পূৰ্ব্ব সম্বন্ধ স্মরণ করাইয়া দিয়া অকালী সিং যখন বলিল যে,তাহার বিশ্বাস প্রভুকন্যার তিনি সৰ্ব্বনাশ হইতে দিবেন না, সিদ্ধেশ্বর রায় তখন রাগে গরগর করিতেছিলেন। কাজেই নুতন ম্যানেজারের আমল পড়িতে না পড়িতে ছোট তরফের প্রজারা শুনিল, অতঃপর তাহাদিগকে বড় তরফে খাজান দিতে হইবে । মফঃস্বলের অমিল পাইক নগদীরা পর্য্যন্ত ক্রমে বড় তরফের টান টানিতে লাগিল। অকালী সিং মহালে গিয়া আর বড় আমল পায় না। সৰ্ব্বস্ব যায় দেখিয়া সে বুদ্ধি খরচ করিয়া কালেক্টর সাহেবের শরণ লইয়াছিল। - . . . অতি বুদ্ধিবলে সিদ্ধেশ্বর বুঝিলেন কালেক্টর সাহেব দেখিতে আসিতেছেন যে, ছোট তরফের অধিকারিণী নাবালিকা কি না ? তাহাকে এখন সাবালিকা প্রমাণ করাইতে পারিলেই বড় তরফের ডিক্ৰীতে বিষয়গুলা সদ্যঃ সদ্যঃ নীলামে উঠিবে। অতএব রায়ু মহী i. শয় তাহার তদ্বিরে ব্রতী হইলেন | - ー・? ssa কৃতজ্ঞতা। - নবম পরিচ্ছেদ । । - - সিদ্ধেশ্বর রায় কত্রী ঠাকুরাণীর হুজুরে হাজিরি দিলেন । বিষয় আশয় সংক্রান্ত সলা-পরামর্শের কথা উঠিলে হরিপ্রিয়ার মাথায় যেন বজ্রপাত হইত, কিন্তু কৌশলী সিদ্ধেশ্বর রায় কোন না কোন অছিলায় মাঝে মাঝে তাহাকে দরবারে বসিতে অভ্যস্ত করিতেছিলেন। অন্যান্য সময়ে বারবেলা এবং শারীরিক অসুস্থতার : ভান করিয়া কত্রী ঠাকুরাণী পাচ দিনের সাধ্য সাধনার কম রায়জীর হাজিরি গ্রহণ করিতেন না, কিন্তু এবারে অনুরুদ্ধ হইয়া বিনোদ । দাসী তাহাকে জানাইয়া দিল, অতিশয় জরুরি এবং গোপনীয় পরামর্শ আছে, না শুনিলে কোকন বাবুর অনিষ্ট ঘটিতে পারে। অগত্যা কত্রী ঠাকুরাণী দরবারে বসিতে সম্মত হইলেন-পর্দার আড়ালে বিনোদ দাসী তার কাছে রহিল। বাহিরের লোকের ভিতর কেবল বিশ্বস্ত খানসামা হরা ম্যানেজার বাবুর সম্মুখে । থাকিতে পাইল । পর্দামধ্যবৰ্ত্তিনী কত্রী দাসী বিনোদার জবানি যাহা বলাইতেছিলেন, “মা বুল্তিছেন” ইতি ভূমিকা করিয়া সে । তাহাই উক্ত করিতেছিল। তাহার কথার কোন অস্পষ্টত না থাকিলেও অভ্যাসবশতঃ হরা খানসাম মুৎসুদিআনা করিয়া মাঝে মাঝে তাহাতে টীকা টিল্পনি করিতেছিল। ইহাতে ম্যানেজার মহাশয়ের বিরক্তির কারণ হইলেও তিনি ঘাড় নাড়িয়া হরার কথায় সায় দিতেছিলেন । রায় মহাশয় কত্রীর উদ্দেশে সাষ্ট্রাঙ্গে প্রণাম করিলেন, ভরসা। শনিৰ স্বচক্ষে দেখিয়া খুলী হইলে ভবিষ্যতে ইষ্ট্রেটের দেওয়ানী তারই হইতে পারে। কিন্তু পর্দার কাপড়টা কিছু অতিরিক্ত যোগ বলিয়া কী তাহার কিছুই লক্ষ্য করিতে পারিলেন না, ।