পাতা:সার ওয়াল্টার স্কটের গ্রন্থাবলী (তৃতীয় ভাগ).djvu/২৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দি এ্যান্টিকোয়ারি বা প্রত্নতাত্ত্বিক একটি বৃক্ষলভাশূন্ত পাহাড়ের ধারে ধারে মেষপালচরা পথ অতিক্রম করিতে হয। পাহাড় হইতে পথ ক্রমে ঢালু হইয়া পাহাড় বেষ্টন করিয়া নামিয়া গিয়াছে। কিছুদূর অগ্রসর হইলে গাছপালা দৃষ্টিপথে পড়িবে । গাছগুলি প্রথমতঃ শীর্ণকায় বোধ হইবে । মেষপাল এই সকল বৃক্ষের নিয়ে মাঝে মাঝে আশ্রয় লয়। আর ৪ কিছুদূর অগ্রসর হইলে বৃক্ষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাষ্টক্সেছে দেখা যাইবে । এক এক স্থানে অনেকগুলি গাছ দাড়াইয়া । মাঝে মাঝে র্কাটা গাছের ঝোপ । বৃক্ষকুঞ্জের পরেই খানিকটা করিয়া মুক্তস্থান, কোথাও ৰ৷ ছোট-খাট ডোবা । মোটের উপর এই স্থানটিকে অরণ্যানী বলিলে অত্যুক্তি গুইবে না। ক্রমেই উপত্যকাভূমি কাছাকাছি দেখিতে পাওয়া যাইবে । নিম্নে তটিনী বা পাৰ্ব্বত্য নিঝরিণী কুলকুল ধ্বনিন্তে বতিয়া চলিয়াছে । ওল্ডবকৃ সকলকে পথ দেখাইয়া লইয়া চলিলেন । তিনি বলিলেন, “মিস ওয়ারভুর, তোমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে ষাচ্ছি, এতে আমার পরম সুখ । আষার মভ এমন সহজে কেউ তোমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না । সব আমার জান । আরে যাঃ ! আমার পরচুলাটা ডালে লেগে এক্ষুনি জলে প’ড়ে যাচ্ছিল |” মিস ওয়ারডুর বলিলেন, “ওতে কিছু মনে করবেন না । আপনার সঙ্গী এপুনি সব ঠিক ক’রে পাঠিয়ে দেবে ” ওল্ডবক বলিলেন, “মিস ওয়ারভুর, তুমি সেনার্যার উপাসিক । দেখ, দেখ ! কি মুনীর দৃপ্ত !” বাস্তবিক অকস্মাৎ তাহাদের সম্মুখে প্রকৃতির অনবদ্য রূপ ফুটিয়া উঠিল । সম্মুখে একটি প্রকাণ্ড জলাশয়—ন্তুদ বলিলেও ধলা চলে । তাহার তীরভাগ সমতল। তার পর তটভূমি ক্রমশঃ খাড়া হইয় উঠিয়াছে—স্থানে স্থানে পাহাড় । মাঝে মাঝে গোচরণ-ভূমি তৃণমণ্ডিত । হ্রদের নিম্নে প্রবাহিণী বঙ্কিয়া চলিয়াছে। নদী হ্রদ হইতে বাহির হইয়াচে । ঠিক উহার পুরোভাগে সেন্টরুথ ধ্বংসাবশেষ। উহাই দেখিবার জন্য সকলে এখানে সমবেত হইয়াছেন । ংসস্তুপ বিরাট নহে, কিন্তু তাঙ্গর সৌন্দৰ্য্য অতি दिफ़ेिख ধ্বংসস্ত,পের অন্তর্গত একটি গির্জা আছে। উহার পূৰ্ব্বদিগ বৰ্ত্তী বাতায়ন এখনও বিদ্যমান । ধ্বংসাবশেষ দেখিলেই উচ্চার স্থপতিশিল্পের প্রশংসা করিতে হয়। গির্জার পশ্চিম অংশ এবং ছাদ সম্পূর্ণ রূপে ভাঙ্গিয় পড়িয়াছে। অট্টালিকার একপার্শ্ব Հ8Ց নদীর উপর ঝুঁকিয়া রহিয়াছে। উগর ভিত্তিমূল পাচাড়ের উপর স্থাপিত । সময় সময় এই স্থান সামরিক কার্য্যে ব্যবহৃত হইয়া থাকিবে । মনট্রোজের যুদ্ধকালে এই স্থানটি অধিকার করিতে নরশোণিওস্রোত প্রবাহিত হুইয়াছিল বলিয়। শুনা যায় । যেখানে বাগান ছিল, এখনও-স্তগায় কয়েকটি ফলের গাছ রহিয়াছে ! অট্টালিকী-স্ত,প হষ্টতে অনেকটা দূরে বড়বড় ওকবৃক্ষ, বাদামগাছ প্রভৃতি দেখা ষাইবে } সমগ্ৰ দুগুটি সুন্দর—মনোরম ৷ ওল্ডবক্‌ বলিলেন, “মি: লভেল, অন্ধকার যুগে এইখানে মানুষ জ্ঞানের চর্চ করত । সংসারবিতৃষ্ণ জ্ঞানীরা এখানে শাস্তিতে বাস করতেন । আমি তোমাকে পুস্তকাগারটা দেখাচ্ছি । ঐ যে প্রাচীর দেখতে পাচ্ছ, ওখানেই সেটা ছিল । আমার কাছে একখানা পুরোনো পাণ্ডুলিপি আছে, তাতে লেখা আছে, পুস্তকাগারে ৫ হাজার বই ছিল । এখানে আমি জ্ঞানী লেল্যাণ্ডের কথা উদ্ধ ত ক’রে বলছি যে, আমাদের দেশের এইরকম লাইব্রেরীর বই মুদীর দোকানে, বাতি তৈরী যারা করে তাদের ঘরে, সকল বিক্রেতার ঘরে গিয়ে পড়েছিল * মিস ওয়ারভুর বললেন, “আপনি কোন গ্রন্থকারের নাম বললেন ;” “জ্ঞানী লেল্যাণ্ড, মিস ওয়ারডুর । ইংলণ্ডের এইরকম লাইবেরীর ধ্বংস দেখে তার জ্ঞান লোপ পেয়েছিল " যুবতী বলিলেন, “আমার মনে হয়, তার দুর্ভাগ্য দেখে বর্তমান যুগের কোন কোন প্রত্নতাত্ত্বিকের যুক্তিজ্ঞান আত্মরক্ষা করতে পারত ” “ভগবানকে ধন্যবাদ দেs, এখন সে রকম ভয়ের আশঙ্কা নেই । তাদের জ্ঞানের এক অধি চামচঞ্জ অামাদের নেই ” মি: ওল্ডংক অতঃপর সকলকে পথ দেখাইয়া হ্রদের তীরদেশ ধরিয়| অবতরণ করিতে লাগিলেন । ক্রমশঃ টাঙ্গর ধ্বংসস্তুপের সম্মুখে আসিয়৷ দাড়াইলেন । প্রত্নতাত্ত্বিক বলিতে লাগিলেন, “ঐখানে তারা থাকতেন । প্রত্ন তত্ত্বের আলোচনা, পুরোনো পাণ্ডুলিপির পাঠোদ্ধার এবং ভবিষ্যং যুগের মামুষের জন্তু নতুন বই লেখা ছাড়া তাদের অন্স কাজ ছিল না ।” বারনেট সঙ্গে সঙ্গে বলিলেন, “আর খুব আড়ম্বরপূর্ণ উপাসনা চালাতেন। পুরোহিতের কাজটাও জাকিয়ে করতেন ।"