পাতা:সার ওয়াল্টার স্কটের গ্রন্থাবলী (তৃতীয় ভাগ).djvu/২৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দি এ্যাণ্টিকোয়ারি বা প্রত্নতাত্ত্বিক দানবের ললাট ও মস্তকে ওকপাতার মালা, তাহার কটিদেশেও পাতার পরিচ্ছদ, হাতে একটা শিকড়সমেত প্রকাণ্ড গাছ । অনেক লোকই নাকি তাহাকে এই বেশে দীর্ঘ পদবিক্ষেপে বিচরণ করিতে দেখিয়াছে—অবশু পাহাড়ের উপর দিয়া। এত লোক এই দৃপ্ত দেখিয়াছিল ষে, বর্তমান নাস্তিক্যবাদীরা সে ব্যাপারটাকে নয়নবিভ্রম বলিয়া ব্যাখ্যা করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন— অর্থাৎ ছায়ালোকের খেল৷ বলিয়। উচ্চার ব্যাখ্যা করিতেন । সে যুগে এই দৈত্য অনেক লোকের সহিত দেখা করিত । হাৱঞ্জ অরণ্যের কিংবদন্তী অনুসারে এই দানবটি কখনও লোকের ভাল সময়েও দেখা দিত, আবার মন সময়েও আবিভূর্ত হই । কিন্তু সকলেই ইহা লক্ষ্য করিয়াছিল যে, দানবটি যাহার প্রতি প্রসন্ন হষ্টয়া অর্থাদি দান করিত, পরিণামে তাহার ভীষণ অমঙ্গলও ঘটিত, সুতরাং রাখালরা যখন তাঙ্গাদের পশুপাল চরাইবার সময় বড় বড় স্তোত্র আবৃত্তি করিত—সেই স্তোত্র পাঠে এই দানব বা দৈত্যের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ দর্শন ষেন না ঘটে । সেই সঙ্গে মাটিন ওয়ালডেকের কাহিনীও তাহারা আবৃত্তি করিত—তাহাদের ভয়বিমূঢ় শিশুসস্তানদিগকেও শুনাইয়া দিত । হার্জ অঞ্চলের সন্নিষ্ঠিত একটি ক্ষুদ্র গ্রামের ধৰ্ম্মমন্দিরে এক জন ভ্ৰাম্যমান ধৰ্ম্মযাজক বক্ততা করিতে উঠিয়াছিলেন । তিনি গ্রামবাসীকে বুঝাইয়া দিলেন যে, যাদুকর, ডাইনী, দানব, দৈত্য, পরী প্রভূতির সহিত কোন ও সংস্রব রাখিবার চেষ্টা করা মহাপাপ—বিশেষঙ: হাবৃঙ্গ পৰ্ব্বঙের দানবের কথা লষ্টয় আলোচনা করাও অন্যায় । মাটিন লুথারের যুক্তিবাদ তখন কৃষকদিগের মধ্যেও প্রচারিত হইয়াছিল ( বর্তমান ঘটন। রাজা পঞ্চম চালসের রাজত্বকালেই ঘটিয়াছিল ) । ধৰ্ম্মৰাজকের কথায় গ্রামবাসীরা বিদ্ধপ করিতে লাগিল । তিনি যতই সতেজ কণ্ঠে এই বিষয়ে উপদেশ দিতে লাগিলেন, অধিবাসীরা ততোধিক জোরগলায় তাহার প্রতিবাদ করিতেছিল । গ্রামবাসীরা শাস্তপ্রকৃতি দানবের বরুদ্ধে কোনও কথা শুনিতে চাঙ্কিল না । তাহারা ভাবিল যে, তাহারা ধৰ্ম্মযাজকের এই সব কথা শুনিতেছে বলিয়া দানব হয় ত তাছাদের উপর ক্রুদ্ধ হইয়। প্রতিশোধ লইতে "ারে । ভ্ৰাম্যমান ধৰ্ম্মযাজক যাহা খুলী বলিতে পারেন । তিনি ত জাজ এখানে আছেন, কল্য অঙ্গর Հ8 Հ ধাইবেন, কিন্তু গ্রামবাসীরা ত এ স্থান ছাড়িয়া অন্তর যাইতে পারিবে না । সুতরাং প্রায়শ্চিত্ত তাহাদিগকেই করিতে হইবে । অবশেষে গ্রামবাগীরা সমবেত হইয়া ধৰ্ম্মযাজকের প্রভি লো নিক্ষেপ করিতে লাগিল । শেষ তাহার র্তাহাকে সেখান হইতে তাড়াইয়ু দিল । তিন জন যুবক সেই দলে থাকিয়৷ ধৰ্ম্মযাজককে ভাড়াইয়া দিয়াছিল। তাহার কাঠ পুড়াষ্টযু কয়ল করিত, তাহ বেচিয়া জীবিকার্জন করিত। বাড়ী ফিরিবার সময় তাহারা ধৰ্ম্মযাজকের সম্বন্ধেই আলোচনা করিতে লাগিল । তিন জনই সহোদর ভ্রাতা । বড় জনের নাম ম্যাক্‌, মধ্যম জৰ্জ এবং কনিষ্ঠের নাম মার্টিন ওয়ালুড়েক ! বড় দুই ভাই বলিতেছিল যে, ধৰ্ম্মযাজকের বক্ততার ভাষা অসংযত হুইলেও, দানবের কোন প্রকার দান গ্ৰহণ করা সঙ্গত নহে— তাহার সহিত কোনপ্রকার সংস্রব রাখাও বাঞ্ছনীয় নকে । কারণ, উহাতে বিপদ ঘটিবার বিশেষ সম্ভাবন । অবশু দানব অসাধারণ শক্তিশালী হইলেও অভ্যস্ত খামখেয়ালী । তাহা ছাড়া ষে কেৰু তাহার সাগষ্য পাইয়াছে, তাহারই পরিণামে সৰ্ব্বনাশ ঘটিয়াছে। দানৰ কি একবার্ট রাভেন ওয়াল্ড নামক নাইটকে প্রসিদ্ধ কালে ঘোড়া দেয়ু নাই ? সেই ঘোড়ার সাহায্যে বীর র্যাভেনওয়াল্ড ব্রেমেলের কৃত্রিম যুদ্ধে যাবতীয় বীরকে পরাভূত করেন নাই ? আবার সেই কালে ঘোড়াই ত তাহাকে লইয়। পাহাড় হইতে খদে লাফাইয়া পড়িয়ছিল—আর তাছাদের কাহারও দেখা পাওয়া যায় নাই । তার পর এই দানবই ডেম গারটড, ট্রডেম্কে মাখন তৈয়ার করিবার এমন অভিনৰ কৌশল শিখাইয়া দিয়াছিল ৰে, পরিণামে তাহাকে ডাইনী বলিয়া আগুনে পুড়িয়া মল্লিতে হইয়াছিল । এইরূপ আরও অনেক দৃষ্টাস্ত আছে । কিন্তু এ সকল কাহিনী শুনিয়াও কনিষ্ঠ ভ্রাতা মাটিন ওয়ালডেকের মনে কোন ৪ প্রভাব বিস্তার করিতে পারিল না । মাটিন তরুণ যুব, উৎসাহী, অসমসাহসিক। সৰ্ব্ববিধ ব্যায়ামে সে গ্রামের সকলকে পরাজিত করিয়াছিল । পাহাড়-পৰ্ব্বতে চড়া তাহার অভ্যস্ত ক্রীড়া । ভয় কাছাকে বলে, তাছা সে জানিও না— কোনও বিপদকেই সে গণনার মধ্যে আলিত না । বিপদ যেখানে, মাটিন সেখানে সৰ্ব্বাগ্রে বাপাইয়া পড়িত। ভ্রাতাদের ভয় দেখিয়া সে হালিয়া বলিল, “আমার কাছে ও সব বোকার মত কথা তোমর। বলে না : যে দৈত্য, লেভ ভালই-লে আমাদের