পাতা:সার ওয়াল্টার স্কটের গ্রন্থাবলী (তৃতীয় ভাগ).djvu/২৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* (tv “ঠিক তাই । ৪ টার আগেই ক্যাপ্টেন মঙ্কবারনস থেকে পালিয়ে আসতে পারেন। আজ ভোর পাঁচটায় তিনি আমার কাছে লুকিয়ে এসেছিলেন । কারণ, তার মামা শয্যা ত্যাগ করবার আগেই সেখানে ফিরে যেতে পারবেন ব'লে । আচ্ছা, নমস্কার, মি: লভেল ।” লেসলী কক্ষ ত্যাগ করিলেন । লভেল অন্যান্ত সাহসী লোকের মতই ধীর ছিলেন । কিন্তু এমন একটা আকস্মিক সঙ্কটসস্কুল অবস্থায় সকলেরই মন অজ্ঞাত ও অনিশ্চিত আশঙ্কায় উৎকণ্ঠিত হইয়া পড়ে । কয়েক ঘণ্টা পরে হয় ত র্তাহাকে ইহজগৎ ইষ্টতে অস্তুতি কষ্টতে হইবে । শাস্ত চিত্তে আলোচনা করিয়। তিনি এরূপ ব্যাপারের যৌক্তিকতা মানিয়া লইতে পারিলেন না। অথবা এমনও হইতে পারে, তাহার হস্ত একজন ভদ্রলোকের রক্তে অমুরঞ্জিত হুইবে । ধৰ্ম্মের দিক দিয়া ও ইহা সমর্থনযোগ্য নহে । একটা কথা বলিলেই কিন্তু এই ভীষণ সমস্তার সমাধান ঘটিয়া যায় । কিন্তু আত্মমর্যাদাজ্ঞান তাহাকে জানাইয় দিল, এখন যদি তিনি সেই কথাটা প্রকাশ করেন, সকলে ভাবিবে তিনি কাপুরুষ, প্রাণের মায়া আছে বলিয়ু শেষ কালে প্রকাশ করিয়াছেন । মিস ওয়ারভুরও পর্যন্ত র্তাহার কাপুরুষতায় ক্ষুণ্ণ হইবেন । ক্যাপ্টেনের সহিত বলপরীক্ষায় ভীত হুইয়াই তিনি অবশেয়ে আত্মপরিচয় দিয়াছেন, ইতা ভাবিয়া সকলেই র্তাহাকে উপহাস করিবে ! ন, তিনি এমন ভাবে আত্মসন্মানকে পথের ধূলায় নিক্ষেপ করিতে পারেন না। পরিণাম যাহাই হউক না কেন, তিনি সংকল্প করিলেন, দ্বন্দ্বযুদ্ধে তিনি যোগ দিবেনই । এইরূপ সংকল্প করিয় তিনি লেফটেন্যান্ট টাফরিলের সহিত দেখা করিতে গেলেন । লেফটেন্যান্ট তাহাকে শিক্ষিত ভদ্রলোকের ন্যায় শিষ্টাচার সহ অভ্যর্থনা করিলেন । সমস্ত ব্যাপারটা তিনি শুনিয়া বিস্মিত হইলেন । কথা সমাপ্ত হইলে টাফরিল আসন ত্যাগ করিয়া ঘরের মধ্যে বার দুই পরিভ্রমণ করিয়া বলিলেন, “ভারী অদ্ভুত ব্যাপার, বাস্তবিক—” “ত জানি, মিঃ টাফলি । এরকম ব্যাপারে আপনাকে অনুরোধ করবার অধিকারও আমার অল্প । কিন্তু ব্যাপারটা এত তাড়াতাড়ি ঘটল যে, অামার গত্যস্তর আর নেই " নৌ-কৰ্ম্মচারী বলিলেন, “একটা কথা জিজ্ঞাস। সার ওয়াল্টার স্বটের গ্রন্থাবলী করি । এমন কোন লজ্জাজনক ব্যাপার এতে আছে কি, যা আপনি প্রকাশ করতে চান না ?” “আমি ভদ্র সন্তান, আমার কথা বিশ্বাস করুন, লজ্জাজনক কিছুই এতে নেই। হয় ত শীঘ্রই আমাকে সব কথা জগৎকে জানাতে হবে * “কোন মিথ্যা লজ্জা বা বন্ধুদের নীচভার, সংশ্ৰবও আপনার জীবনব্যাপারে নেই ত?” • লভেল বলিলেন, “বিন্দুমাত্র নয় ।” টাফরিল বলিলেন, “ও রকম নিবুদ্ধিতায় আমার কোন সহানুভূতি নেই। এই ধরুন না, আমার আত্মীয়দের কথাই বলি, শীঘ্রই আমার বিয়ে হবে— আমার আত্মীয়দের মনে ধারণা খুব নীচু ঘরের সঙ্গেই আমি কাজ করতে চলেছি । মেয়েটি খুব ভাল, তাকে আমি খুব ভালবালি—উভয়েই প্রতিবেশী । প্রণয় যখন হয়েছিল, তখন নৌবিভাগে এমন সন্মানজনক কাজ অামি পাইনি " লভেল বলিলেন, “মিঃ টফরিল, আপনি ঠিক জানবেন, আমার মা-বাবার পদমর্য্যাদ। যাই হোক না কেন, শুধু দন্তের খাতিরে প্রকাশ করতে নারাজ, এমন ভাববেন ন! ! এখন আমার এমন অবস্থা ষে, আপাততঃ আমার বংশ সম্বন্ধে আলোচনা করবার অধিকার নেই ।” “যথেষ্ট, যথেষ্ট । আপনার হাত দিন । আমার যথাসাধ্য এ ব্যাপারে আপনাকে সাহায্য করব ! ভবে ব্যাপারটা বড়ষ্ট অপ্রীতিকর—কিন্তু সে কথা ভেবে লাভ নেই । দেশের ডাকের পরই আত্মসম্মানের আহবান ! আপনি সাহসী যুবক । আমার ধারণ, ক্যাপ্টেন ম্যাকইনটায়ার তার বংশমর্য্যাদার যতই গৰ্ব্ব করুন না কেন, ছোকরার মর্য্যাদ। কি ? ওঁর বাবা আমারই মত একজন নাবিক ছিলেন । মামার দৌলতেই ওঁর স্ব কিছু। নইলে ওঁর স্থান কোথায় ? যাক, আমরা দুজনে আজ এক সঙ্গে খেতে বসে এ বিষয় আলোচনা ও ব্যবস্থা ঠিক করে ফেল্ব। আপনি পিস্তল ব্যবহার ভাল জানেন ত?” লভেল বলিলেন, “খুব ভাল রকম জানিনে " “সেট। বড় দুঃখের কথা—ম্যাকুইনটায়ার ও লিষয়ে ওস্তাদ বলে প্রকাশ " লভেল বলিলেন, “তাতে আমিও দুঃখিত হচ্ছি । অবগু তার জন্যও বটে, আমার জন্সও বটে। আমি তা হলে যথাসাধ্য লক্ষ্য স্থির করব ।” টাফরিল বলিলেন, “আমাদের ডাক্তার সার্জেনের সহকারীকে মাঠে ডেকে নিয়ে যাব—সে পিস্তলের গুলীর চিকিৎসায় ভারী মজলুড় । লেসলীকে জানাব