পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৪১৭

 স্বর্ণকুমারী দেবীর বহু গল্প উপন্যাসের নায়িকাদের মধ্যে খুব বেশী বৈশিষ্ট্য না থাকলেও ‘‘স্নেহলতা”র ‘গৃহিণী’, ‘টগর’, ‘‘জীবনের মা” এবং রেখাচিত্র “ছোট বউ’’ এতেও একটি একটি জীবন্তমূর্তি প্রস্ফুট হয়ে উঠেছে। তাঁর “কাহাকে’’ বাংলাভাষায় সর্বপ্রথম ইঙ্গবঙ্গসমাজ নিয়ে গল্প ও উপন্যাস রচনার পথ খুলে দেয়। আজ অবশ্য সে-পথে যাত্রীর অভাব নেই, কিন্তু পথপ্রদর্শনের সম্মাননা যথাস্থানে দিতে কুষ্ঠিত হওয়া অসঙ্গত।

 স্বর্ণকুমারী দেবীর কবিতা গাথা “খড়্গপরিণয়ের” “অলকা’’র প্রাপ্ত পত্রখানি তখনকার বাংলাসাহিত্যে কাব্যলিপিকার প্রবর্তক বলা চলে; তার বহু অনুলিপি হয়েছিল। একটু নমুনা দিচ্ছি;—

−“গত নিশি স্বপনে, মরমের বিজনে,
মরি কি তোমার রূপ হেরেছিনু অলকে,
সেই ছটা মহিমা, সেই প্রেম প্রতিমা,
দেখিতে দেখিতে ঘুম ভেঙ্গে গেল পলকে।
যেন হেসে হেসে লো, প্রেমময়ী বেশে লো,
সোহাগে আগুলি তুমি পথে এসে দাঁড়ালে।
কিবা ধীর তাকানি, লাজমাখা মু’খানি,
ঈষৎ পড়েছে বাঁধা অলকেরই আড়ালে।”—ইত্যাদি

 স্বর্ণকুমারী দেবীর পর অর্থাৎ সমসময়ে কয়েকজন লেখিকার লেখা বই ছাপা হয়েছিল। “সিন্ধুবালা” বা “সন্তাপিনী’’তে একটু নূতন ধাঁচের চরিত্রসৃষ্টির চেষ্টা হয়েছিল। “বিজনবাসিনী” প্রভৃতিতে খুব সাধারণ নারীরই দেখা পেয়েছি।

 কামিনী রায়, গিরীন্দ্রমোহিনী, মানকুমারী এঁরা স্রষ্টা নারী, এঁদের লেখায় সৃষ্টা নারী বেশী নেই, যাঁরা আছেন, তাঁরা

O.P. 92-53