পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S 8 সাহিত্য-মীমাংসা বিখ্যাত মনীষী Benedetto Croce অর্থজ্ঞানের সহিত শব্দের এই অবিচ্ছেদ্য সম্বন্ধ অতি সুন্দরভাবে প্রকাশ করিয়াছেন : “...a thought is not thought for us, unless it be possible to formulate it in words ;...we do not say that the words must necessarily be declaimed in a loud voice...; but it is certain that when a thought is really thought, when it has attained to the maturity of thought, the words run through our whole organism, soliciting the muscles of our mouth and ringing internally in our ears...”? এখন বুঝা গেল, শব্দ ও অর্থ কেন পরস্পর সম্বদ্ধ। কিন্তু অবিবিত্ত শব্দ ও অর্থের প্রাধান্তবিবেক কি করিয়া সম্ভবপর ? ইহার উত্তরে বলিব, চমৎকারিতা। চমৎকারিতাই এই প্রাধান্তবিচারের একমাত্র তুলাদণ্ড। শব্দ যেখানে অর্থ হইতে অধিকতর মনোজ্ঞ, সেখানে শব্দই প্রধান । অর্থ যেখানে শব্দঝংকার হইতে অধিকতর চমৎকারী, সেখানে অর্থই প্রধান । কিন্তু এই উভয় ক্ষেত্রে প্রকৃত সাহিত্যের লক্ষণ স্বীকার করা যায় কি না, তাহা লইয়া সমালোচকগণের মধ্যে বিবাদের অন্ত নাই । অনেকে বলিবেন, কাব্য পাঠ করিবার সময় শব্দের মাধুর্যই প্রধানভাবে আমাদের চিত্ত আকৃষ্ট করে, অর্থের দিকে প্রথমত আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ থাকে না। সংস্কৃতে জয়দেব-রচিত গীতগোবিন্দের কথাই ধরা যাউক । পদের সৌকুমাৰ্য, ছন্দের লালিত্য, প্রকাশভঙ্গীর কোমলতাই সাধারণ পাঠকের হৃদয় বিমোহিত করিয়া তুলে, শ্রোতা তখনকার মত জয়দেবের কবিতার অর্থ বুঝিবার কথা ভুলিয়াই যায়। সাধারণ, ‘গীতগোবিন্দে’র শ্রোতা বা পাঠককে যদি হঠাৎ কেহ প্রশ্ন করিয়া বসেন— মহাশয়, জয়দেবের এই কবিতাটির কি অর্থ বুঝিলেন? তাহা হইলে উত্তর আসিবে “শব্দঃ শ্ৰতোহর্থে ন জ্ঞাতঃ”—আমি শব্দগুলিই শুনিয়াছি, অর্থের প্রতি লক্ষ্য করি নাই। বাংলা সাহিত্যে সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের কবিতায় শব্দের এই চমৎকারিত মুখ্যভাবে লক্ষিত হইয়া থাকে। ইহা অস্বীকার করিবার >. The Essence of Aesthetic, pp. 42-43,