পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য ও রসতত্ত্ব V)2 করিয়াছেন : “স্থায়িভাবসমূহ যেন রক্ত-পীত-নীল-হরিতদিবর্ণের দ্বারা রঞ্জিত কতকগুলি সুত্র। এবং এই সূত্রের দ্বারাই ম্বেন ক্ষণিক উদয়ব্যয়শালী বিচিত্র লীলাগর্ভ স্ফটিক-কচোন্দ্ৰসকলের ন্যায় স্বচ্ছ ব্যভিচারিভাবসমূহ নিরস্তর গ্রথিত রহিয়াছে। রক্তনীলাদিসূত্রস্থ্যত স্ফটিকখণ্ডসমূহ যেমন স্থত্রের বর্ণেরঞ্জিত হইয়। পদ্মরাগ, মরকত, মহানীল প্রভৃতি বিচিত্র রত্বের আকারে প্রতিভাত হয়, দুইটি স্ফটিকখণ্ডের মধ্যবর্তী অবকাশ যেমন স্বত্রবর্ণরঞ্জিত স্ফটিকখগুদ্বয়ের বিচিত্র বর্ণচ্ছটায় প্রোদ্ভাসিত হইয়া উঠে, সেইরূপ ব্যাভিচারিভাবসমূহ রতি, ক্রোধ, হাস, শোক প্রভৃতি স্থায়িস্থত্রের বৈচিত্র্যে রঞ্জিত হইয়া উঠে, এবং পূর্বাপর ব্যভিচারিভাবদ্বয়ের সেই প্রতিফলিত বৈচিত্র্যই আবার স্বত্রস্থানীয় স্থায়িভাবকে নব নব ভঙ্গিতে শবলিত করিয়া তাহদের মধ্যে অপরূপ মনোহারিতা ও আস্বাদনীয়তার সঞ্চার করে। অতএব, দৃঢ়মূল স্থায়িভাবসমূহই ব্যভিচারিভাবসমূহের একমাত্র ভিত্তি। ব্যভিচারিভাবসমূহের চিত্তভূমির সহিত স্বতন্ত্র, স্থায়িনিরপেক্ষ কোনও যোগ বা সম্বন্ধ নাই। স্থায়ীর ব্যাপক সত্তা হইতেই তাহদের উদ্ভব ; স্থায়ী হইতে প্রতিবিম্বিত বৈচিত্ৰ্যই তাহাদের সহস্র বিচিত্র বিলাসের মূলে। তথাপি এই প্রতিফলিত বিলাসবৈচিত্র্যের পুনঃপ্রতিফলনই আবার স্থায়ীকে রমণীয়তা দান করে । এইরূপে স্থায়িভাব ও ব্যভিচারিভাব পরস্পরোপকারী। স্থায়িভাব সমুদ্রের মত ব্যাপক, উদয়ব্যয়হীন ব্যভিচারিভাবসমূহ সমুদ্রবক্ষের আবর্তের মত, বুদ্ধদের মত, কল্লোলের মত পরিবর্তনশীল, বৈচিত্র্যশতশালী। স্থায়ী হইতে ব্যভিচারিভাবের জন্মলাভ, স্থায়িভাবেই তাহার স্থিতি, স্থায়ীতেই তাহার অস্তময় ॥২ ভস্তাচার্য এই আটটি ভাবকেই কি জন্য স্থায়ী বলিয়াছেন, তাহার প্রতি তিনি স্বয়ং কোনও যুক্তি দেন নাই । অভিনব গুপ্তাচার্যই সর্ব প্রথম ভরতাচার্যের ১. . অভিনবভারতী, প্রথম ভাগ, পৃ. ২৮৪ । অভিনবগুপ্তের উপরিবাণত উদাহরণই পরবর্তী অীলংকারিকগণের প্রক্সুত্রস্তায়ের মূলে। ২. দশরূপৰ ৪.৭ ও ধনিককৃত ‘অবলোক’ দ্রষ্টব্য।